কণ্ঠ
একটা তেজিয়ান কণ্ঠ কিনতে চাই,
মোহর কত নিবি বল?
তবুও আমায় একটা কণ্ঠ কিনে দে।
যে কণ্ঠে বাজবে আমৃত্যু প্রেম, মমতা, ক্ষোভ, শোভা, মৃত্যু ক্ষিপ্রতা!
একটা কণ্ঠের কঠিন গড়ন গড়িয়ে দে
যে কণ্ঠে টানবে আমার বেনামি কবিতার চরণ।
কণ্ঠ ছোঁবে আমায়,
আমার হৃদয়ের এক রত্তি প্রেম।
কণ্ঠ কিনে অর্ঘ্য দেবো
নিভে যাওয়া কবিতার প্রদীপে।
একটা কণ্ঠ কিনবো বলে
আজও আছি পথ-ও চেয়ে,
একটা কণ্ঠ নিঃসঙ্গতার সঙ্গাহীন তৃণ,
যার সতেজতায় বোধ সজীব হয়ে ওঠে সহস্রবার।
কণ্ঠের আসক্তি বারংবার আমায় দহন করে
যেমন করে অনাহারে শরীর দহন!
জানো তো কণ্ঠেরও মৃত্যু হয়,অকাল মৃত্যু!
যদি না তাতে তেজ না থাকে জুলুমের নির্যাতনের!
আজও একটা কণ্ঠের জন্য মোহর সঞ্চয় করি তিল তিল করে।
উলঙ্গ মাতৃভূমি
উলঙ্গ স্তন, ভাঁজ পড়া দেহ
উলঙ্গ নেশা, পুরুষের কামভাব।
উলঙ্গ চিত্রশিল্পীর কামুক আঁকা
উলঙ্গ নারীত্ব, নারীর মাতৃত্ব।
উলঙ্গ বাজার, ছায়াঘেরা পার্ক
উলঙ্গ সামাজিক আচার, সামাজিকতা।
উলঙ্গ ধর্ষিতা, ধর্ষিতার গোপনীয়তা
উলঙ্গ নারীর উরু, ফেসবুক, টুইটার।
উলঙ্গ নারী, নারীর অস্তিত্ব
উলঙ্গ লজ্জা, লজ্জার হাত পা।
উলঙ্গ বোধ, বুদ্ধি শালীনতা
উলঙ্গ পুরুষের চোখের পর্দা।
উলঙ্গ কবিতার অশ্লীল বাক্য
উলঙ্গ মাজারে কোরআন পোড়া।
উলঙ্গ মুসলিমের ওপর অত্যাচার
উলঙ্গ অন্ধের দেশে ধর্ম ব্যবসা।
উলঙ্গ নতুন নতুন ফতোয়া জারি
উলঙ্গ রাজার রং মহলের নর্তকী।
উলঙ্গ আমার মা, মাটি, মাতৃভূমি!
শোষণ
এ বাতাস ভীষণ ভারী, দেখো বইছে কেমন?
এ আওয়াজ করে নিথর দেহ ও মন
দেখো শব্দ কেমন উস্কানি দেয়।
পাতারা আজ বেজায় নরম
গাছটি দেখো মরছে অসময়ে।
খিদেরা বলছে ভাতের ভাপ কমুক,
ভাপ এখন খাচ্ছে ভুখাদের।
খিদে তখন তসবি জপে তৃপ্তিতে ঢেকুর তোলে
রঙের তুলি রঙ খুঁজে বেড়ায়,
রঙ বলে আমার শিরার অফুরন্ত লাল রং নিয়ে নাও যতখানি তুমি চাও।
নিয়ে নিলাম যতখানি চেয়েছি,
ফিরিয়ে দিলাম প্রাণশূন্য খাঁচাটি।
শতায়ু চোখ
রাত্রি কোলাহল বাড়ায়, দিনের আলোর আড়ালে
হেঁটে হেঁটে আলপথে তোমাদের খুঁজি,
খুঁজতে থাকি অবেলার বুকপকেটে হাত রাখি।
গণমানুষের ভিড়ে, উত্তাল রাজপথে!
মজলিশে, নিপীড়িতদের হাহাকারে।
ঝটিকা মিছিলে, শতায়ু চোখের ছানি পড়া চোখের ঝাপসা আলোয়।
খুকির লাশের উপর অগণিত ধর্ষকের সাঁড়াশি আয়োজনে!
পাওয়া হলো না আর, এতটাই বোকা কানে গেল না কথা,
পাওয়া হলো না তোমাদের,
তোমরাই আছো মিশে আমাদের কোলাহলে,
নীরবে নিভৃতে অতি গোপনে।