জুলাই গণহত্যাকারীদের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের আমলেই সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে নিয়ে উপদেষ্টারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, “৩৬ দিন নয়, মাত্র ১৫ দিনেই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় দিতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। এই আন্দোলনে শুধু নারায়ণগঞ্জেই ৫৬ জন শহীদ হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ২১ জন এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা। তাঁদের আত্মত্যাগ কখনো ভুলে যাওয়ার নয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই গণহত্যার বিচার যেভাবে এগোচ্ছে, কোনো ধরনের গাফিলতি না হলে অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ হবে। আমাদের লক্ষ্য—বিচারকার্য এই সরকারের সময়েই সম্পন্ন করা।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী শাসনের অধীনে ছিল। অনেকে গুম হয়েছেন, অনেকে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। গণভবনকে একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাদুঘরে রূপান্তরের কাজ চলছে। আশা করি, ৫ আগস্ট তা উদ্বোধন করা যাবে।”
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তি পেয়েছি। এই আন্দোলন ও শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা।”
অনুষ্ঠানে শহীদ আদিলের মা আয়েশা বেগম বলেন, “আমার সন্তানসহ যারা প্রাণ দিয়েছে, তাদের রক্তের ঋণ যেন বৃথা না যায়। আমি চাই, এই হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা। অনুষ্ঠানের শেষে শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত হয়।