বাংলা ছড়ার জগতে জগলুল হায়দার এখন এক অনন্য নাম—প্রতিবাদের ছন্দযোদ্ধা। দুই যুগের বেশি সময় ধরে তিনি লিখে চলেছেন অন্যায়, ফ্যাসিবাদ, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে।
তার ছড়া কখনো ব্যঙ্গাত্মক, কখনো সরাসরি তীক্ষ্ণ; যেন শাসকদের গদির নিচে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি লিখেছেন ভোটচুরি, গুম-খুন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ধর্মীয় নিপীড়ন, কিংবা সরকারের চাটুকারিতা নিয়েও।
২০২২ ও ২০২৪ সালে যখন দেশে ভয়ের রাজত্ব চলছিল, তখনও প্রকাশ পেয়েছে তার দুই প্রতিবাদী বই—‘স্বাধীনতা সবার’ এবং ‘হায়দারি হাঁক’। এই বইগুলোর প্রতিটি ছড়া যেন সময়ের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া সাহসিকতা।
“বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর”, “এই যে ব্রো”, “সিলের ভোট”, “ভাতের হোটেল”, “ভাগেন রাজাপক্ষে”—এমন অনেক ছড়া আজ মানুষের মুখে মুখে। তিনি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে কিংবা ডিবি হারুনকে ব্যঙ্গ করে লিখতেও পিছপা হননি।
শাপলা চত্বরের নির্মমতা থেকে শুরু করে ভোটহীনতার হতাশা পর্যন্ত—সবকিছুই উঠে এসেছে তার ছড়ায়। কখনো তিনি বলেন—
“তুমি লড়ো, মিছিল গড়ো দেশটা কাঁপাও গর্জে,”
আবার কখনো বলেন—
“স্বাধীনতা সবার, এমনকি গরু ছাগল মেষের।”
জগলুল হায়দারের লেখা কেবল সাহিত্য নয়, এটি প্রতিরোধ। এটি জনগণের কণ্ঠস্বর। যখন অধিকাংশ কবি চুপ ছিলেন, তিনি ছড়ায় ছড়ায় ধ্বনি তুলেছেন—
প্রতিরোধ, প্রতিবাদ ও বিপ্লবের।
তাই তিনি কেবল একজন ছড়াকার নন—একজন সাহসী বিপ্লবী কবি।