বাঘ ও রাষ্ট্র
বাঘকে হরিণ ভেবে ভুল করি
যেমন রাষ্ট্রকে ভাবি নিরাপদ
ডোরাকাটা থাকলেই বাঘ হরিণ নয়
রাষ্ট্র থাকলেই মানুষ নিরাপদ নয়
তারপরও রাষ্ট্রের নামে স্লোগান দেই
প্রজন্মের হাতে তুলে দেই পতাকা
কলেমার মতো জাতীয় সংগীত জপে
তাকে বলি দেশটা তোমার
পূর্বপুরুষের ভিটা
আলো বাতাসের মতো
স্বাভাবিক সরল অধিকার
জানি-তাকে মিথ্যা বলছি
সে জানে কি?
নেড়ি
নেড়ির মতো শুয়ে থাকি
কুণ্ডলী পাকিয়ে
কুকুর জড়িয়ে ধরি
শীত লাগছে,
এভাবে জড়িয়ে ধরা
নেড়ি কুকুর
ভেতরে ঢুকে গিয়ে
কিছু দেখলেই
লেজ গুটিয়ে পালায়
কুইকুই করে
ইদানীং আশেপাশে তাকাই
চারিদিকে শুধু
লেজ গুটানো জীবন
আর কুই কুই শব্দ।
কবিও হন্তারক হবে
কেউ আমাকে কুপিয়ে দেয়ার আগে
মনে হয় আমিই কাউকে কুপিয়ে দেই
এভাবে হয়ে উঠছি হন্তারক মনে মনে।
গলির মোড়ে প্রায়শই যাদেরকে দেখি
কাউকে বিপজ্জনক মনে হলে চুলে বা চলনে
খুন করি প্রতিদিন কল্পনায়।
এভাবে রক্তাক্ত কল্পনা দিন দিন বাড়ছে
আজকাল পকেটে হাত দিয়ে অস্ত্রের সন্ধান করি
সঙ্গম করতে করতে কিনে ফেলি রামদা।
একদিন তোমাদের রাষ্ট্রের
ধড় বিচ্ছিন্ন রক্তাক্ত মাথা নিয়ে
রক্তের আল্পনা আঁকতে আঁকতে
হেঁটে যাবো টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া
সামনে হয়তো কবির নামে সমন জারি হবে
পত্রিকায় কবিতার বদলে
ছবির নিচে লেখা উঠবে
একে ধরিয়ে দিন!
মানুষ বাড়ছে না
শুনেছি সুন্দরবনে বাঘ বাড়ছে
জনঅরণ্যে মানুষ বাড়ছে না
শুমারি করে দেখি
লোকালয়ে কমছে মানুষের পায়ের ছাপ
অথচ প্রতিদিন ভিড় ঠেলে অফিসে যাই
রাস্তায় জ্যামে পড়ে হাঁসফাঁস করি
বিকেলে ফিরি পকেটে নিয়ে জন্মনিরোধক
এভাবে দিন যাচ্ছে
সময় গড়াচ্ছে
ভিড় বাড়ছে
মানুষ বাড়ছে না।