নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনার আকাশে যেন ভেসে উঠেছিল প্রতিরোধের সুর। লেখক-সাংবাদিক-আবৃত্তিশিল্পীর কথায় যেন রূপ নিয়েছিল প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ধ্বনি! ২৪ জুলাইয়ের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি আর সেই বিজয়ের মর্মবাণীকে ধারণ করে শনিবার সন্ধ্যায় খুলনার উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরির প্রাচীন মিলনায়তনে জুলাই বিপ্লবের পঙ্ক্তিমালা শীর্ষক কবিতা পাঠের আসর ও ‘জুলাই পদক ২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের মূল প্রতিধ্বনি ছিল কালচারাল ফ্যাসিজমকে প্রতিহত করে মুক্তচেতনার শিল্প-সাহিত্য বিকাশের অঙ্গীকার।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে মিলনায়তন ভরে ওঠে কবি, সাহিত্যিক, আবৃত্তিশিল্পী আর সাংস্কৃতিক কর্মীদের পদচারণায়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় আয়োজন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনে ছড়াযুদ্ধের অগ্রনায়ক ছড়াসম্রাট জগলুল হায়দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা কবি-সাহিত্যিক ফোরামের আহ্বায়ক এস এম আয়ুব আলী। সঞ্চালনায় ছিলেন সাইফুল ইসলাম মল্লিক।
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের ছড়াযুদ্ধের অগ্রনায়ক ছড়াসম্রাট জগলুল হায়দার, সম্মুখসারির লেখক, গবেষক ও সমালোচক কবি কাবেদুল ইসলাম, জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি সংগ্রাহক কবি ও নজরুল গবেষক সৈয়দ আলী হাকিম, খুসাস-এর সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবী কবি আজাদুল হক আজাদ, জুলাই আন্দোলনে গুরুতর আহত শিক্ষার্থী আবদুল্লা আল শাফিল, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ও চিন্তক দিপ্র হাসান, ছড়াকার ও প্রকাশক কাদের বাবু, নির্ভীক সাংবাদিক মোহাম্মদ এম এ সাদীকে পদক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনে ছড়াযুদ্ধের অগ্রনায়ক ছড়াসম্রাট জগলুল হায়দার
খুলনার সেই রাত ছিল কেবল একটি সাংস্কৃতিক আসর নয়; বরং ছিল এক ধরনের গণঘোষণা। আবৃত্তির ছন্দে, কবিতার উচ্চারণে আর সম্মাননার গৌরবে উচ্চারিত হলো মুক্তির বাণী— ‘কালচারাল ফ্যাসিজম হটুক, মুক্তচিন্তার শিল্প-সাহিত্য জাগুক।’
অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পীরা শাহ্ মাখদুম, এস এম শাহরুজ্জামান, সাবিত্রী গাইন নীলিমা, জৈত্রী জিনিয়াস, অম্লান বিশ্বাস শান, অনামিকা সাহা তিন্নী।

অনুষ্ঠান উৎযাপন কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ আলী হাকিম ও সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মোড়লসহ বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক এনামুল হক, আব্দুর রাজ্জাক রানা, মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু, সাংবাদিক এহতেশামুল হক শাওন, কবি ফিরোজ আহমেদ, আবৃত্তিশিল্পী মনিরুজ্জামান লাভলু, , আবু আসলাম বাবু, খান আখতার হোসেন, সাইফুর মিনা, জিনারুল ইসলাম, এজি রানা, নাসিমা সুলতানা নিলুসহ খুলনার অধিকাংশ সাহিত্য সংগঠনের কবি-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিজন ও সংগঠক। সবাই তুলে ধরেন একটি অভিন্ন বার্তা, ‘সংস্কৃতি শুধু বিনোদনের উপকরণ নয়; সংস্কৃতি প্রতিরোধের শক্তি, মুক্তির হাতিয়ার।’