গ্রাফিতি প্রদর্শনী ও মতবিনিময় সভায় বক্তারা
২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, শ্রমজীবী শ্রেণি এবং নারীদের অনেকেই এখন নেতৃত্বের অগ্রভাগে নেই। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে হলে সেই ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে—এমনটাই বলেছেন বিভিন্ন বক্তা।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে “জেন-জির প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি: গ্রাফিতির আঁল্পনায় ৩৬ জুলাই” শীর্ষক এক গ্রাফিতি প্রদর্শনী ও মতবিনিময় সভায় এ কথা উঠে আসে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নীতি গবেষণা কেন্দ্র (এনজিকে)।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির শিক্ষক এবং এনজিকে-র গবেষণা ফেলো ড. খান শরীফুজ্জামান। গ্রাফিতি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও গবেষক মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান।
মুখ্য আলোচক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, “২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের মানুষ এক হয়েছিল একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের জন্য। সেখানে ছিলেন নারীরা, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রী, পাহাড়ি ও সমতলের মানুষ—সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়েছিল শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে। রাস্তায় মোনাজাত করে মানুষ তাঁর বিদায়ের প্রার্থনা করেছে। এটাই প্রমাণ করে, মানুষ মুক্তি চেয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই পরিবর্তন যদি স্থায়ী করতে চাই, তবে আমাদের একসাথে ভাবতে হবে—কেমন বাংলাদেশ চাই আমরা? ‘বিকল্পহীন নেত্রী’ বলে যারা ১৫ বছর ধরে আমাদের শেখাতে চেয়েছে, তাদের মানসিকতা ভাঙতে হবে। আমরা যদি পরস্পরের মধ্যে বিভেদ না বাড়িয়ে সংলাপের মাধ্যমে ঐক্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আর রক্তপাতের দরকার হবে না। ১৪শ মানুষের মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যম, মাদ্রাসা শিক্ষাপদ্ধতির শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন পেশাজীবী তরুণ। তারা প্রত্যেকে তাদের অভিজ্ঞতা, আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, প্রত্যাশা ও গত এক বছরে কী অর্জিত হলো বা কী অর্জিত হয়নি—তা তুলে ধরেন।
বক্তারা মত দেন, পুরনো ব্যবস্থায় যারা সুবিধাভোগী, তারা কখনোই নতুন বাংলাদেশ চায় না। তাই কাঙ্ক্ষিত দেশ গড়তে হলে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া প্রজন্মের মানুষদের আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশের প্রস্তাবনা সামনে আনতে হবে।