BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
    • অস্ট্রেলিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • স্মৃতিকথা
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার
BDOUTLOOK
Thursday | October 16 | 2025
বিজ্ঞাপন দিন
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
    • অস্ট্রেলিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • স্মৃতিকথা
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার
ভিডিও
BDOUTLOOK
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
    • অস্ট্রেলিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • স্মৃতিকথা
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার

News 24 Hours BDOUTLOOK.COM

গল্প

বিভ্রম : নাজমুন নাহার হেলেন

বিডিআউটলুক September 1, 2025
September 1, 2025
শেয়ার Facebook
52

টেস্ট পরীক্ষার খাতাগুলো এখনো জমা দেয়া হয়নি। কলেজ ছুটির পরেও বসে বসে খাতা দেখা শেষ করে রীমা। সবাই যে যার মতো চলে গেছে। সবার শেষে আঞ্জুমান আরা আপা গেলেন, যাবার সময় বার বার তাগাদা দিয়ে বলছিল কখন বের হবেন কখন বের হবেন। কিন্তু রীমার তো শ্বাস ফেলার সময় নাই, তাকিয়ে দেখবে কখন? মুখ তুলে তাকাতেও তো সময় লাগে, সময় কই সময় অপচয় করার। খাতায় মুখ গুঁজেই হু হা করে জবাব দিচ্ছিল। আপা আরও কী কী যেন বলছিল সে কথায় কান দেয়নি মন দেয়নি। দেখা শেষে খাতা থেকে মুখ তুলে দেখি সবাই চলে গেছে। রুমটাও বেশ অন্ধকার, এই অন্ধকারে বসে সে খাতা দেখছিল? চোখের ওপর প্রেসার ফেলে? একটু হতাশ হলেও নির্ভার লাগে খাতার বোঝা নেমে যাওয়ায়। খাতাগুলো বেঁধে বান্ডিল করে। খাতার বান্ডিল হাতে নিয়ে বের হতে গিয়ে দেখে চারপাশ অন্ধকার হয়ে আছে সে খুব চমকে যায়। তার মনে হয়, সর্বনাশ সময় কত হলো? সন্ধ্যা হয়ে গেছে খাতা দেখতে বসে? চৈত্রের লম্বা দিন। চারদিক অন্ধকার দেখে সে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। সে সময়ের হিসাব করতে বসে। তার মনে হয়, যে কোনো সময় ঝড়বৃষ্টি নামতে পারে। এমন চারদিক অন্ধকার করা দিনগুলোতে মন যেন কেমন হয়ে যায়। অদ্ভুত এক মন কেমন করা ভর করে রীমার ওপর। সে ভাবে শুধু কি তারই এমন হয়? নাকি সবারই হয়।
ক্লাস সেরে কোনো রকম খুব দ্রুত লাঞ্চ-নামাজ সেরে সে আনুমানিক দুইটা সময় খাতার বান্ডিল নিয়ে বসেছিল। দেখতে দেখতে এতটা সময় চলে গেছে সে ভাবতেই পারেনি। কবজি উল্টিয়ে ঘড়ি দেখতে গিয়ে মনে হলো তার ঘড়ির ব্যাটারি পাল্টানো হয়নি। ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে দেখে পৌনে পাঁচটা। দুটো মিসড কল আর তিনটা মেসেজের সাইন ফুটে আছে স্ক্রিনে। কিন্তু মোবাইলে চার্জ নাই, যে কোনো মুহূর্তে অফ হয়ে যেতে পারে। সে একটু দ্বিধায় পড়ে যায়, তবু কল ওপেন করে দেখে বাসার টিঅ্যান্ডটি নাম্বার। সে সঙ্গে সঙ্গে কল দিল কিন্তু কেউ রিসিভ করল না। সে আবার দ্বিধায় পড়ে, আসরের নামাজ পড়ে বের হবে নাকি বাসায় ফিরে পড়তে পারবে। আবার সময়ের হিসাব নিয়ে বসল। প্রিন্সিপাল সাহেবের বাসা কলেজ থেকে কাছেই। হেঁটে যেতে দশ মিনিট লাগবে। কিন্তু কারো বাসায় গেলে তার মর্জির ওপর নির্ভর করে সেখান থেকে বের হয়ে আসাটা।
রীমা দূরে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখে বাচ্চারা ক্রিকেট খেলছে। পিয়ন কাম কেয়ারটেকার ছেলেটা খেলা দেখছে আবার মাঝে মাঝে বল কুড়িয়ে এনে দিচ্ছে। রীমা দোনোমনো করতে করতে আবার কমন রুমে ফিরল। খাতার বান্ডিল রেখে ওয়াশরুমে গেল অজু সারতে। যদিও তার আবারও মনে হচ্ছে, যে কোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। তবু নামাজ সেরেই যেতে মনস্থির করল। অজু করতে করতে ভাবল কী জীবন কাটাচ্ছে সে, দৌড় আর দৌড় তারপর? ফিনিশিং টাচ আর কতদূর?
তার অসুস্থ স্বামী, ছোট বাচ্চা সংসার তারপর কী হবে? কী হবে এত ব্যস্ততার শেষে? বাসায় কাজের মানুষ নাই। মেয়েটার স্কুল খোলা আর ছেলেটা তো কোনো কাজ কিংবা ঘরের কোনো কিছু ছুঁয়েও দেখে না। ঘরে একটা মানুষ পুরো শয্যাশায়ী তার সবটাই করে দেয়া লাগে। সময় আর থাকে কই নিজের ভাগে? এই আজও কলেজে বসে খাতাগুলো দেখল। সবাই খাতা জমা দিয়েছে, রীমারই শুধু জমা দেয়া বাকি। সবাই তাগাদা দিচ্ছে, তার জন্যই টেস্টের রেজাল্ট দিতে দেরি হচ্ছে। কী করবে সে? বাসায় গেলে তো সময় পায় না। আজ বুয়া ছুটি থেকে ফিরল তাই বাসায় না ফিরে কলেজে বসে খাতা দেখা শেষ করতে পারল সে। অজু শেষ হওয়ার আগেই তার মনে পড়ল, আহা নাম্বারিং শিটে তো নাম্বারগুলো তোলা বাকি রয়ে গেছে। আচ্ছা ওই কাজে তো বেশি সময় লাগবে না। আবার মনে মনে হাসল রীমা। নামাজ পড়তে বসে আরও যে কত্ত কিছু মনে পড়বে।
সত্যিই তাই নামাজে বসে মনে পড়ল বুয়া কাপড়গুলো তুলেছে তো? বৃষ্টি আসার আগেই সব কাপড় তুলে ফেলতে হবে। ছেলেটা যে কোথায় এখন? মেয়েটা কি তার বাবাকে বিকালের নাশতা দিয়েছে? সকালে সে বলে আসার সময় পায়নি। ছোলা ভেজানো ছিল, বুয়া দেখেছে তো? না হলে বিকালে বাচ্চারা আর তার বাবা চায়ের সাথে কী খাবে? শুকনো বিস্কুট দিলে তো মুখ কালো করে সরিয়ে রাখবে। আচ্ছা বৃষ্টি আসার আগেই সে পৌঁছাতে পারবে তো প্রিন্সিপাল স্যারের বাড়িতে? এমন নানান রকম দুনিয়াদারির ভাবনা ভাবতে ভাবতে নামাজ শেষ করে পিয়ন ছেলেটাকে ডাকল দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়ার জন্য। তারপর তার মোবাইল থেকে বাসার টিঅ্যান্ডটি নাম্বারে একটা কল দিল। কেউই ফোনটা ধরল না। আর রিং বেজে শেষ হওয়ার সাথে সাথে দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে মোবাইলটা অন্ধকার হয়ে গেল। মেয়েটা কোথায় গেল? বুয়া কি ছাদে কাপড় তুলতে গিয়েছে? সুজন? সে কী করছে? সেও তো লাঠি হাতে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটে। সেও এসে কলটা ধরতে পারত। কপালে দুশ্চিন্তার কুঞ্চন তুলে রীমা পা চালাল।
রীমার বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে সবে। তবে তাকে দেখে ত্রিশের নিচেই মনে হয়। পাতলা ছিপছিপে চাপা রঙয়ের সুন্দর দেহের গড়ন। তার ছেলে সামনে বছর এসএসসি দিবে তাকে দেখে এটা কেউই বলবে না।
রীমার স্বামীর নাম সুজন। প্রায় ছয় ফিট লম্বা, ময়লা রঙয়ের দারুণ সুদর্শন। রীমা যখন অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে তখন সুজন স্টুডেন্ট লাইফ শেষ করেছে। সুজনকে বেশি দিন বেকার বসে থাকতে হয়নি। ব্যাংকের চাকরিটা পেয়েই রীমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। সে অর্থে তাদের প্রেম না থাকলেও দু’জনের ভালো লাগাটা ছিল। তাই বিয়েতেও কারো বাড়ির পক্ষ থেকে কোনো কিছু বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বিয়ের পরেও সে পড়াশোনা চালিয়েছে। পড়া শেষে একটা স্থানীয় এমপিওভুক্ত কলেজে টিচার হিসেবে নিয়োগও পেয়ে যায়। এসবের ভিতরেও দুই বাচ্চা, দেবর শ্বশুর শাশুড়ি সব মিলিয়ে ভালোই কাটছিল সংসার। কিন্তু ওই যে কথায় বলে সব ভালোরই স্থায়িত্ব খুব কম। রীমার বেলাও তাই ঘটল। প্রথমে দেবর চলে গেল কানাডা। পরে দেশে এসে বিয়ে করে বউ নিয়ে গেল। তারপর এক বছরের মধ্যে শ্বশুর আর শাশুড়ি মারা গেলেন। পুরো সংসারে সে একা হয়ে গেল। তবুও ভালোই ছিল কিন্তু হঠাৎ একদিন ব্যাংকে কাজ করতে করতে প্রেসার বেড়ে সুজন স্ট্রোক করল। দশদিন আইসিইউতে থাকার পর বেডে দিল আরও এক মাস। সেখানে থাকার পর বাড়ি ফিরল কিন্তু তখনও সে পুরোপুরি সুস্থ নয়। সুজন বেসরকারি ব্যাংকে ছিল। তাই ব্যাংক তার দেনা পাওনা মিটিয়ে কুইট করল। বছর তিনেক হলো সে বাসায়, তার একপাশটা অবশের সাথে সাথে তার মানসিক অবস্থাও দ্রুত খারাপ হচ্ছে। সব কিছুরই চিকিৎসা চলছে, তবে উন্নতি চোখে পড়ার মতো নয়। আজকাল তার শারীরিক শুশ্রূষা করার পাশাপাশি মানসিক শুশ্রূষাও করতে হয়। সবসময় তার খিটখিটে মেজাজ আর সন্দেহ বাতিকতা। তার ডাক্তার ওষুধপত্র, বাজার সদাই, বাচ্চাদের স্কুল টিউশন সব দায়িত্বই তার। এছাড়াও তিন বেলার মেনু ঠিক করা, দুবেলা চায়ের আয়োজন করা। সব একা রীমাকেই সামলাতে হয়। অবশ দিকটার পুরোপুরি সেন্স এখনো ফেরেনি।
রীমা কলেজে থেকে বের হতে হতে ভাবল বাসায় যে কী হচ্ছে? আর ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে কটায় যে সে ফিরতে পারবে আল্লায় জানে। বাসায় ফিরে তো সেই মুখ কালো করে থাকা স্বামীর মান ভাঙতে হবে। সাথে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খোঁজখবর নেয়া। আগামীকালের ক্লাসের প্রিপারেশন। উফ! সময় কই নিজের জন্য। নিজের মতো করে সময় ব্যয় করার! এসব ভাবতে ভাবতে প্রিন্সিপাল স্যারের বাড়ির গেটে পৌঁছে গেছে। গেটম্যান দরজা খুলে দাঁড়াল। ডুপ্লেক্স টাইপ বাংলো। মেইন গেট পেরিয়ে অনেকখানি জায়গা রঙিন ফুলে ফুলে সজ্জিত। দুদিন আগে বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় গাছগুলো ঝকঝক করছে। বেশ কয়েক ধাপ সিঁড়ি পেরিয়ে গোল একটা বারান্দা। বারান্দার চারপাশে নানান ঝলমলে পাতায় সজ্জিত টব বসানো। বড় কাঠের দরজাটা একটু ফাঁক করাই মনে হচ্ছে। সে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে খিদা টের পেল। কলেজ থেকে একটা চা খেয়ে বের হলেই ভালো হতো। দরজা ঠেলে ভেতরে গিয়ে দেখে সব লাইট জ্বলজ্বল করে জ্বলে ঘরটা ঝলমল করে তুলেছে। কিন্তু কোথাও কেউ নাই। এমনকি বাড়িটাতে কারো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে না। সে কী করবে ভাবতে ভাবতে সোফায় বসে পড়ল। এমন সময় সে বাসার রান্নার আধবয়সী মহিলা বের হয়ে এসে তাকে দেখে বলল, চা দিম? রীমা নিজের অজান্তে ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বলেই জানতে চাইল বাড়িতে কেউ নাই? স্যার নাই?
সে তার পান খাওয়া লাল দাঁতের হাসি দিয়ে বলল, ‘সব্বাই দাওয়াত খাবা গেইছে। মোহ চলি যাছুনু, তোমাক দেখি খাড়াইনু। এলায় চা দিয়া চলি যাম। স্যার আছে উপরত। খবর দিম এলা। শুনে রীমা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল।
রীমা সাজানো ঝকঝকে ড্রয়িংরুম দেখছে আর ভাবছে আহা এমন পরিপাটি করে নিজের আর কই থাকা হলো! আসলে পরিচ্ছন্নতা একটা যৌথ অভিযান। সবাই পরিচ্ছন্ন থাকতে চাইলেই পরিচ্ছন্ন থাকা সম্ভব। তার স্বামী তো এখন অসুস্থ তবে যখন সুস্থ ছিল তখনও সে একটু এলোমেলো টাইপেরই ছিল। ছেলে মেয়ে দুটোই বাবার হাত পেয়েছে। আর শাশুড়িও রান্নায় ওনার যত আগ্রহ ছিল অন্য কিছুতে তার তেমন আগ্রহ ছিল না। আর সে নিজে? নিজের পড়াশোনা বাচ্চা আর শারীরিক সমস্যা নিয়ে এতটাই ক্লান্ত থাকত যে কোনো দিক তাকানোর সুযোগ ছিল না। বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এলো।
বুয়া পাউরুটি টোস্ট আর চায়ের ট্রে সামনে রেখে বলল, খাই নেন, জুড়াই যাবে না হইলে। স্যারক খবর দিছু, আইসেছে। বুয়া বের হয়ে যেতেই খোলা দরজা দিয়ে রীমা বাইরে তাকাল। এখনও বৃষ্টিটা নামেনি। মনে মনে বলল আরেকটু পরে নামুক। সে অন্তত এ বাসা থেকে বের হওয়ার পর নামলেও তার কোনো টেনশন থাকবে না। বৃষ্টিটা কি তার কথা শুনবে? আরেকটু কাল গুনবে? এমন সময় পদশব্দে তার চিন্তার সুর কাটল। প্রিন্সিপাল স্যারকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিল। রীমা ভালো করে তাকিয়ে দেখল তাদের প্রিন্সিপাল ৫৫-এর ওপরে বয়স হলেও বেশ শক্ত-সামর্থ চেহারা। নিশ্চয় নিয়মিত স্বাস্থ্যচর্চা করেন। রিসেন্ট ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি রেখেছেন। স্যার বেশ লম্বা, তিনি কি অমিতাভকে ফলো করেন? মনে মনে হাসল রীমা। এমনিতেও স্যার খুব হাসিখুশি মাই ডিয়ার টাইপ। সবার সাথে ফ্রেন্ডলি।
: বসেন বসেন, চা তো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, শুরু করেন।
: জি আপনি?
: আমি কিছুক্ষণ আগেই খেয়েছি।
: বাসায় কাউকে দেখছি না।
: ওরা সব দাওয়াতে গেছে, ফিরবে রাতে খেয়ে। আপনি চা শেষ করেন।
এরপর আর কথা খুঁজে না পেয়ে সে চা নাশতায় মন দিল।
প্রিন্সিপাল সাহেব খাতার বান্ডিল টেনে নিয়ে বললেন, নাম্বারগুলো তো শিটে তুলেননি?
: জি এখনই তুলে দিচ্ছি। সে তাড়াহুড়া করল।
কাপ ট্রে সরিয়ে রেখে সে নাম্বার শিট টেনে নিল। মুখোমুখি সোফায় প্রিন্সিপাল সাহেব। বুয়া ট্রে নিয়ে ফিরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই চলে গেল বাইরে। আর বুয়া বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বাইরে শো শো আওয়াজ তুলে ঝড় শুরু হলো। ঝড়ের শোঁ শোঁ শব্দে রীমা একটু থমকাল। তার মন কেমন করা ভাবটা যেন আবার ফিরে আসছে। চোখ তুলে তাকাতেই দেখে প্রিন্সিপাল স্যার উঠে জানালা বন্ধ করছেন। কিছু ধুপধাপ শব্দ হলো, বোধহয় বারান্দার টবগুলোর মধ্যে কিছু উল্টে পড়ল। এমন তাণ্ডবের শব্দ শুনতে শুনতেই রীমার কাজ শেষ হলো। নাম্বার শিটসহ খাতার বান্ডিল বেঁধে চোখ তুলে তাকাতেই দেখে প্রিন্সিপাল তার মুখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। রীমা একটু লজ্জা পেয়ে বলল, ‘স্যার কমপ্লিট হয়েছে।’
: ও আচ্ছা (সচকিত হয়ে বললেন)। কিন্তু বাইরে যা ঝড়বৃষ্টি যাবেন কিভাবে?
রীমা আনমনে জবাব দিল হুম তাই তো।
তার চেয়ে চলেন আরেক কাপ চা খাই। বৃষ্টি থামলে বের হয়েন।
রীমা বলল, আমি চা বানাই?
: আরে নাহ আপনি তো গেস্ট। তাছাড়া এ বাড়ির রান্নাঘরের তো কিছুই আপনি চেনেন না। এমন সময় কারেন্ট চলে গেল। চার্জার লাইট জ্বালিয়ে প্রিন্সিপাল সাহেব রান্নাঘরে গেলেন চা বানাতে। রীমাও সাথে সাথে গেল। স্যারের চা বানানো দেখে মনে হলো অভ্যস্ত হাত। প্রিন্সিপাল সাহেব বললেন, রাত জাগার অভ্যাস আছে আমার, তাই চা বানানোটা শিখতে হয়েছে। দুকাপ চা বানিয়ে এক কাপ রীমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, তারপর বলেন, আপনার সংসারের গল্প। সাহেব কেমন আছেন? ওনার ইমপ্রুভমেন্ট কেমন?
: এই আছে, চলছে ট্রিটমেন্ট। রীমার মনে পড়ল কলেজে বের হওয়ার সময় সে ক্রুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। গলায় হিসহিস শব্দ তুলে বলছিল, এত সাজ কার জন্য সাজো বুঝি না মনে করো? ঘরে পঙ্গু স্বামী রেখে রংঢং করে বেড়াচ্ছ। সব বুঝি সব। আল্লাহর লানত পড়বে তোমার ওপর। এসব মনে পড়ায় একটা দুঃসহ আবেগে রীমার চোখ পানিতে ভরে গেল। ঝরঝর করে ঝরে পড়ার আগেই রীমা শেষ হওয়া চায়ের কাপটা টেবিলে নামিয়ে রাখল। উঠে গিয়ে জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। স্যারের নজর এড়িয়ে চোখ মুছল। একটু লজ্জাও পেল এমন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ায়। স্যার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। মাথা ঝাঁকিয়ে বলছেন, না চোখের পানি ফেলবেন না। মনে সাহস রাখুন। দিন কি এরকম থাকবে? দিন বদলাবে।
বাইরে ঝড়ের দাপট কমেছে কিন্তু ঝুমবৃষ্টি চলছে। হঠাৎ কি হলো স্যারকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে হু হু করতে কাঁদতে শুরু করল রীমা। তার গা শিরশির করছে, হঠাৎ কেন জানি তার মনে হলো একটা বন্ধ ঘরে তারা দুজন। একথা মনে হতেই সে সরে এলো একটু। প্রিন্সিপাল স্যার তার দিকেই তাকিয়ে আছে। দুজনেরই চোখাচোখি হলো। কিন্তু তারপর কি হলো রীমা জানে না। শুধু ফিল করল যে তার ঠোঁট স্যারের ঠোঁটের ভিতরে। সে অদ্ভুত এক আবেশে ভেসে যেতে লাগল। যখন ঠোঁট ছেড়ে তার ঘাড়ে ঘুরতে লাগল ঠিক সে সময় সিনেমা দৃশ্যের মতো একটা বিদ্যুৎ চমকালো। সেই বিদ্যুৎ চমকে সে ছিটকে সরে দাঁড়াল। ছি ছি সে একি করছে? মুহূর্তকাল না ভেবে সে ব্যাগটা তুলে নিয়ে ছিটকে বেরিয়ে গেল ঝুমবৃষ্টি উপেক্ষা করে ভিজতে ভিজতে বৃষ্টির মধ্য দিয়ে।
ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা থেকে

শেয়ার Facebook

আরও যেসব নিউজ পড়তে পারেন

মানুষ : বিশ্বজিৎ দাস

October 1, 2025

যুগল : মোহিত কামাল

September 1, 2025

সব চরিত্র কাল্পনিক : খান মুহাম্মদ রুমেল

August 6, 2025

ম্যানেজার : খালেদুর রহমান জুয়েল

August 2, 2025

ভয়ঙ্কর জঙ্গলে বিভীষিকা :: রেজাউল করিম খোকন

July 11, 2025

শক্তি :: মোহিত কামাল

July 11, 2025

অদম্য কলাগাছ :: গাজী তানভীর আহমদ

July 5, 2025

রত্নদ্বীপের খোঁজে :: প্রিন্স আশরাফ

July 5, 2025

ফুলে কাঁটা :: বিশ্বজিৎ দাস

July 5, 2025

হৈমন্তী : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

July 3, 2025

সাম্প্রতিক খবর

  • ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলা

    October 9, 2025
  • টিকটকের আদলে ফেসবুক রিলসে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে মেটা

    October 9, 2025
  • ১৭ বছর পর সাক্ষাৎকার : কবে ফিরবেন, নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, কী বললেন তারেক রহমান

    October 6, 2025
  • যেসব অভ্যাস কমিয়ে দিচ্ছে ফোনের আয়ু

    October 6, 2025
  • ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন

    October 2, 2025

BDOUTLOOK.COM

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মাহমুদা জুয়েনা

নির্বাহী সম্পাদক : কাদের বাবু

  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
    • অস্ট্রেলিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • স্মৃতিকথা
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার

bdoutlook2@gmail.com

  • Privacy Policy
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
    • অস্ট্রেলিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • স্মৃতিকথা
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার