চিরকুটে রাজনীতি, ব্যক্তিগত ভালোবাসা আর মনোবাঞ্ছার প্রকাশ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক থেকে এবারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালংকারের পাশাপাশি এক বস্তা চিরকুট। এসব চিরকুটে কেউ রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ লিখেছেন ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও জীবনসংক্রান্ত আশা–আকাঙ্ক্ষার কথা।
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, চার মাস পর শনিবার সকালে খোলা হয় পাগলা মসজিদের ১৩টি সিন্দুক। এতে পাওয়া যায় ৩২ বস্তা টাকা, বিপুল স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। এর সঙ্গে মিলেছে প্রায় এক বস্তা চিরকুট।
চিরকুটগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বার্তা লেখা ছিল। একটি চিরকুটে লেখা হয়েছে— “হে পাগলা বাবা, তোমার দোয়ার বরকতে নির্বাচন চাই না, আমাদের দরকার ইউনূস সরকার। তুমি দোয়া করো যেন নির্বাচন না হয়। দোয়া রহিল—ইতি সাধারণ জনগণ।”
আবার অন্য একটি চিরকুটে লেখা ছিল— “শেখ হাসিনা আসবে বাংলাদেশ হাসবে, শেখ হাসিনা বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”
শুধু রাজনীতি নয়, ব্যক্তিগত জীবনের ভালোবাসা ও সম্পর্ক নিয়েও এসেছে আবেদন। যেমন এক চিরকুটে কেউ লিখেছেন— “হে আল্লাহ, আমার অন্তরে যে নারী আছে, যদি সে আমার ভাগ্যে থাকে তবে দ্রুত বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন। আর যদি ভাগ্যে না থাকে, তবে তাকে ভুলে যাওয়ার শক্তি দিন।”
অন্য এক চিরকুটে লেখা ছিল— “ভুল পথে আছি কিনা জানি না, সঠিক পথে আছি কিনা তাও জানি না। তবে যাকে পাঁচ বছর ধরে একইভাবে ভালোবাসি, যদি সে আমার কপালে থাকে তবে শিগগিরই তাকে আমার করে দিন। নয়তো ভুলে যাওয়ার তৌফিক দিন।”
চিরকুটগুলোর বেশির ভাগই ছিল বেনামি। মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানায়, সিন্দুক খোলার সময় এমন চিরকুট প্রায়ই পাওয়া যায়। তবে এবার সংখ্যাটা তুলনামূলক বেশি। চিরকুট রাখার কারণে সিন্দুকের ভেতরে জায়গা নষ্ট হয়, অনেক সময় টাকা রাখতেও সমস্যা হয়। এ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসিঠাট্টাও হয়। তাই এবার এসব চিরকুট একটি বস্তায় ভরে মুখ বেঁধে রাখা হয়েছে।
প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ এসে এই মসজিদের সিন্দুকে দান করেন। তাঁদের বিশ্বাস, এখানে দান করলে মনের আশা পূর্ণ হয়।