কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ঘরের দরজা ভেঙে ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় পুলিশের অগ্রগতি প্রতিবেদন না দেওয়ায় কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১২ আগস্ট তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এ আদেশ দেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।
গত ২৯ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে “দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, মামলা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ওই প্রতিবেদন এবং আরও একটি পত্রিকার খবর যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত রুলসহ আদেশ দেন, যেখানে ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করা এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন থেকে তাঁর ছবি ও ভিডিও সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনকে মামলার অগ্রগতি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে আদালতে জমা দিতে বলা হয়।
কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও কোনো লিখিত প্রতিবেদন জমা পড়েনি। রাষ্ট্রপক্ষ একাধিকবার সময় চেয়ে নেয়, তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিবেদন না আসায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করে পুলিশ সুপারকে তলব করেন।
আবেদনকারী আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী বলেন, “আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পুলিশ সুপার প্রতিবেদন দেননি। বারবার সময় নেওয়া হলেও লিখিত কিছু জমা হয়নি। আজ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানালেন, পুলিশ সুপার হোয়াটসঅ্যাপে একটি কাগজ পাঠিয়েছেন, কিন্তু আদালত স্পষ্টভাবে লিখিত প্রতিবেদন চেয়েছিলেন।”
উল্লেখ্য, আলোচিত এই ঘটনার সূত্রপাত হয় গত জুন মাসে কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে। অভিযোগে বলা হয়, একদল ব্যক্তি একটি ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে এক ২৫ বছর বয়সী নারীকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই থানায় মামলা করেন। কিন্তু মামলা হওয়ার পরও তার নিরাপত্তা, মানসিক সুরক্ষা এবং ডিজিটাল মাধ্যমে ভিডিও বা ছবি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এই প্রেক্ষাপটে আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় আগামী ১২ আগস্ট কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে—এমনটাই জানানো হয়েছে আদালতের আদেশে।