BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার
BDOUTLOOK
Thursday | July 31 | 2025
বিজ্ঞাপন দিন
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার
ভিডিও
BDOUTLOOK
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার

News 24 Hours BDOUTLOOK.COM

রম্য

নাইট কোচে এসি বাসে :: ইমরুল ইউসুফ

বিডিআউটলুক July 16, 2025
July 16, 2025
শেয়ার FacebookThreadsBluesky
18

ফরিদ আলী দরদর করে ঘামছেন। উসখুস করছেন। তাকাচ্ছেন এদিক ওদিক। চারদিকে শুধু গাড়ি আর গাড়ি। আর মাত্র পনেরো মিনিট। তারপরই গাড়ি ছাড়বে। অথচ সে বসে আছে ট্রাফিক জ্যামে। তার মনে হচ্ছে ‘জেলখানা মার্কা’ এই সিএনজি থেকে নেমে হেঁটে যেতে পারলেই ভালো হতো। কিন্তু এত পথ হাঁটা সম্ভব নয়। অগত্যা কী আর করা! বসে বসে পোল্ট্রি মুরগির মতো ঝিমানো। আর উটপাখির মতো গলাটা একটু উঁচু করে সিগন্যাল বাতির দিকে তাকানো।
সিগন্যাল ছেড়েছে। গাড়িগুলো হুড়মুড়িয়ে ব্যা ব্যা করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। মনে হয় যেন হঠাৎ বৃষ্টি এসেছে। আর সেই বৃষ্টি মনের সুখে ঘাস-খাওয়া ছাগলগুলোর গায়ে পড়েছে। এখনই শুরু হবে একশ মিটার দৌড়। বৃষ্টি দেখে দলবদ্ধ ছাগল যেভাবে ছোটে সিএনজিগুলোও সেভাবে ছুটছে। ছুটছেন ফরিদ আলী। সামনে কী আছে দেখাদেখি নেই। এখন একটাই ভাবনা— পৌঁছাতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাতে হবে। কারণ বাস ছেড়ে দিলেই তো কেল্লা ফতে। ঈদে বাড়ি আর যাওয়া হবে না। এক হাজার টাকা দিয়ে এসি গাড়ির টিকিট কাটা। এর সঙ্গে আছে আড়াই শ টাকা সিএনজি ভাড়া। যা তাই কথা! বাস ফেল মানেই সাড়ে সর্বনাশ। এজন্য টেনশন নামক যন্ত্রণাটি মাথায় স্ট্যান্ডবাই হয়ে আছে। তিনি টেনশনকে কিছুতেই পেনশনে রাখতে পারছেন না। আবেগে আপ্লুত হয়ে সিএনজিওয়ালাকে বলছে, বেটা তোর গাড়িতে পাঙ্খা লাগারে বাপ। আর তো সহ্য করা যাচ্ছে না।
এই কথা শুনে চালক বলল, চাচা আমারও সহ্য হইতাছে না। এর সঙ্গে শুরু হইছে আপনের বকবকানি। আপনে আমার গাড়ি থেইকা নামেন। আমি আপনারে আরেকটি গাড়ি কইরা দেই। তাইলে তাড়াতাড়ি যাইতে পারবেন। এই কথা শুনে ফরিদ আলী আরও রেগে আগুন। বললেন, কী বললি বেটা? আর একবার বল। তোর জান আমি ঠোঁটের আগায় এনে দিব। তোর জান আমি কবচ করে টেবিলের পায়ার নিচে রাখব। বেটা উল্লুক কোথাকার! তুই আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে চাস? এত্ত বড় সাহস?
হ্যাঁ, আপনারে আমি এখন গাড়ি থেকে নামাইবো। নামেন চাচা। আমরা আইসা পড়ছি। বেটা ফাজিল আমার সাথে তামাশা করো? চালক বলল, তামাশা করমু ক্যান। চায়া দেহেন বাইরে। ফরিদ আলী বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যি সত্যিই তারা স্টেশনে পৌঁছে গেছে। সে ঝটপট নামতে গিয়ে তার প্যান্টের পকেট বেধে গেল সিএনজির দরজার সিটকিনিতে। অমনি ফড়ফড় করে প্যান্টের পকেট ছিঁড়ে গেল। পকেট থেকে দ্রুতগতিতে কয়েকটি খুচরা পয়সা ঝনঝন শব্দে বের হয়ে গেল। মনে হলো যেন পয়সাগুলো ফরিদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে হাসছে। ফরিদ সাহেব রাগে কটমট করে তাকালেন চালকের দিকে। কিন্তু কিছু বললেন না। ভাড়াটা মিটিয়ে দিলেন দৌড়। দৌড়াতে দৌড়াতে কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখলেন গাড়ি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জানে পানি এলো ফরিদ আলীর।
কিন্তু ততক্ষণে তার তলপেটে পানির চাপে হাঁসফাঁস অবস্থা। সে আর কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা চলে গেল বাথরুমে। বিশেষ কাজটি সেরে দ্রুত হাঁটা শুরু করলেন গাড়ির দিকে।
গাড়িতে পা রাখতেই শীতল বাতাস ছুঁয়ে গেল তাকে। আর তিনি যখন দুই পাশের সিটগুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে পিছন দিকে যাচ্ছিলেন সবাই তার দিকে কটমট করে তাকাল। একজন শুধু বলল, সুপার ‘ভাইজান’ সাহেব এই সেই লোক যিনি আমাদের উদ্ধার করতে এসেছেন। এবার দয়া করে গাড়ি ছাড়েন। কথাটি ফরিদ সাহেবের কানে গেলেও কিছু বললেন না। সোজা গিয়ে বসলেন সর্বশেষ লাইনে ‘সভাপতি’র আসনে। অর্থাৎ যে সিটটি বাসের ভেতর চলাচলের রাস্তার ঠিক মাঝ বরাবর থাকে সেই সিটে বসলেন। মনে মনে বললেন— হায়রে কপাল এত টাকা দিয়ে টিকিট কেটেও বসতে হলো পিছনে! কয়েক দিন আগে কেন যে টিকিট কাটলাম না। আবার ভাবলেন— না একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। এই লাইনে যদি কেউ না বসে তাহলে ঠান্ডার মধ্যে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আরামসে যাওয়া যাবে। বিষয়টি ভেবে মনে মনে পুলক অনুভব করলেন ফরিদ সাহেব।
এমনটি ভাবতে ভাবতে তার হাত চলে গেল প্যান্টের পকেটে। দৌড়াদৌড়ির ঠেলায় তিনি ভুলেই গিয়েছিলে যে তার প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে। এই ছেঁড়া প্যান্ট পরে কীভাবে যাবেন বাড়িতে? এমন সময় তার মনে হলো ব্যাগে আরেকটি প্যান্ট আছে। লুঙ্গি পরে এই প্যান্টটা বদল করে নিলেই তো হয়। ভাবনা মতো কাজ শুরু করলেন ফরিদ সাহেব। এমন সময় ড্রাইভার করলেন হাওয়া ব্রেক। আর যায় কোথায়। তিনি এপাশ-ওপাশ করতে করতে ধপাস করে পড়ে গেলেন সিটের মাঝখানে। ওরে বাবারে— ওরে মারে বলে চিৎকার করে উঠলেন তিনি। সুপার ভাই তাড়াতাড়ি পেছন দিকে আসতে লাগল। প্যাসেঞ্জাররা পেছন দিকে তাকাতাকি করল। দেখল একজন শরীরে লুঙ্গি জড়িয়ে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। পাশের সিটের একজন ফরিদ সাহেবকে ধরে উঠাল। বলল, কী ব্যাপার ভাই? পড়লেন কীভাবে? সিট ধরে বসেননি? আপনার গায়ে লুঙ্গি কেন? শীত বেশি লাগলে কম্বল নেন। আরাম পাবেন। ফরিদ সাহেব এ কথার কোনো জবাব দিলেন না। আবারও বসলেন সেই সভাপতির আসনে। এখন কী করা যায় তাই ভবতে লাগলেন।
এমন সময় সুপার ভাই পানি আর বিস্কুট দেওয়া শুরু করলেন। এরপর শুরু হলো কম্বল বিতরণ। তবে সবাইকে নয়। যারা চাচ্ছে শুধু তাদেরই সে কম্বল দিতে লাগল। কিন্তু দেখা গেল অনেকেই কম্বল চাচ্ছে কিন্তু সুপারভাইজার দিচ্ছে না। এক প্যাসেঞ্জার বলল, কী ব্যাপার ভাই কম্বল দিচ্ছেন না কেন? আমাদেরও তো শীত বলতে কিছু আছে। নাকি আমরা অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ থেকে এসেছি। আমাদের কি শীত বলতে কিছু নাই? আগে বলে দিলে তো বাড়ি থেকে কম্বল নিয়ে আসতাম। আর সুপারভাইজার সাহেব শুনেন, কম্বল আনলে আপনাকে ও আপনার ড্রাইভারকে একটা করে দিতাম। এই কথা শুনে সুপারভাইজার কিছুটা বিব্রত বোধ করল।
এই কথা শুনে সুপারভাইজার বলল, ভাই আছে তো। কিন্তু আমাদের গাড়িতে আর কোনো কম্বল নাই। আপনারা দয়া করে একটি কম্বল দুজনে শেয়ার করেন। এই কথা শুনে প্যাসেঞ্জাররা আরও ক্ষেপে গেল। বলল, যতটা সিট ঠিক ততটাই কম্বল থাকার কথা। কম্বল কি সব বেচে খেয়েছেন? নাকি বাড়িতে শীতবস্ত্র হিসেবে আত্মীয়স্বজনদের দিয়ে এসেছেন। এই কথা শুনে আরেকজন বলল, আরে না ভাই। ডাস্টবিনের মতো দুর্গন্ধযুক্ত ওদের এই কম্বল কেউ ফ্রি দিলেও নিবে না। আর আপনি বলছেন…। সে আর কথা শেষ করল না। সুপারভাইজার এসব কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দিলেন। সিডি প্লেয়ার থেকে বের করে দিলেন পুরাতন সিডি। নতুন একটি সিডি ঢুকানোর সাথে সাথেই টিভিতে শুরু হলো নাটক। প্রায় সবার মনোযোগ নাটকের দিকে। ফরিদ আলীও মন দিয়ে নাটক দেখা শুরু করলেন। গাড়িতে নাটকের সংলাপ ছাড়া আর কিছু শোনা যাচ্ছে না। সিটের ফাঁকে ফাঁকে মোবাইলের আলো ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। ফরিদ সাহেব অনুভব করলেন তিনি চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। টিভির ছবি কেমন জানি ঘোলা ঘোলা দেখা যাচ্ছে। চোখের পাতা নিচের দিকে নেমে আসছে। একসময় নিচে নেমেই গেল চোখের পাতা দুটি। হাত দুটিও কেমন নির্ভার হয়ে আসছে। মাথাটা ভারী ভারী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে একটু গড়াগড়ি করে নিতে পারলেই ভালো হতো। কিন্তু সুপারভাইজার সামনে। চোখের দৃষ্টি বরাবর বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করছে আলো। এই অবস্থায় কি ঘুমানো যায়? সুতরাং তিনি লাইট কখন বন্ধ হবে সেই অপেক্ষায় থাকলেন।
অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো। লাইট বন্ধ হওয়ার সাথে সাথেই তিনি শোয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন। মনে মনে বললেন, হে দয়াময় দয়া করে কেউ যেন পেছনের সিটে না বসে তুমি দেখো দয়াময়। তোমার কাছে এই মুহূর্তে আর কিছুই চাই না হে পরোয়ার দিগার। এই কামনা করতে করতেই তিনি গা এলিয়ে দিলেন সিটে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো নাকের ঘরঘরানি। প্যাসেঞ্জাররা ঠিক বুঝতে পারছিলেন না যে গোঙানির মতো বিকট নাকডাকার শব্দ কোথা থেকে আসছে। অবশেষে একজন আবিষ্কার করলেন নাকবাদ্য। পেছনের সিট থেকেই আসছে নাকের এমন ‘মধুর’ শব্দের ঘনঘটা। তরুণ এক প্যাসেঞ্জার বলল, অসহ্য এই বাদ্য বন্ধ না করলে জার্নিটাই মাটি। দাঁড়াও বেটা তোমার আরাম ছুটাইতাছি। চাচি নিশ্চয় বাড়িতে এক মিনিটও ঘুমাইতে দেয় না। কত রাত যে চাচি চাচাকে ঘুমাইতে দেয়নি তার কোনো হিসাব নেই। তা না হলে কেউ গাড়িতে এভাবে ঘুমায়? আরে চাচি দেখে যাও তোমার নওসা কেমন করে ঘুমাইতাছে। তুমি চাচারে একটু ঘুমাতে দিও চাচি। তাহলে আমরা গাড়ি-ঘোড়ায় একটুখানি বাঁচি।
এই কথা শুনে আরেকজন বলল, ভাই আপনি দেখি চারণ কবি হয়ে গেছেন। অতি কষ্টে মানুষের মনে নাকি কবিতার ঝড় ওঠে। আপনারও কি সেই অবস্থা? এখন কাব্য না বলে বরং চাচার নাকডাকা থামান। আমরা তো আর বসতে পারছি না। প্রথমজন বলল, না ভাই আমি চারণ কবি না, আমি বারণ কবি। অতিকষ্টে আমার মনেও ছন্দ আসে এটা ঠিক। তবে ছন্দ বললেই সবাই আমাকে বলে, আরে মিয়া থামান আপনার কবিতা। কবিতা দিয়ে কিচ্ছু হবে না। না ভাই আমি পারব না। পারলে আপনি চাচার নাকডাকা থামান। পারলে ওনাকে সিট থেকে নামিয়ে নিচে শুইয়ে দিন। আবারও কবিতা! ভাই আপনি পারেনও। বলল পাশের সিটের এক যাত্রী।
এই কথা বলতে না বলতেই সুপারভাইজার পেছনে এসে হাজির। বলল, কী হইছে ভাই? কী আর হবে। চাচা যে শব্দে নাক ডাকতাছে ড্রাইভারের তো আর হর্ন বাজানোর দরকার নাই। চাচারে ঘুম থেকে ওঠান তাড়াতাড়ি। তা না হলে আপনারে কম্বলচাপা দিমু। আচ্ছা ভাই দেখছি। সুপারভাই পেছনে গিয়ে দেখলেন সত্যিই চাচা অঘোরে ঘুমাচ্ছে। ব্যাঙের ডাকের মতো নাক ডাকছে। আর সুপারভাইজার ডাকছে চাচা, ও চাচা ওঠেন। চাচার কোনো সাড়াশব্দ নেই। কিন্তু নাকের সাড়া ঠিকই আছে। পাশ থেকে একজন বলল, হাত থাকতে মুখে কেন? ধাক্কা দেন। জোরে ধাক্কা দেন। তা না হলে এই ঘুম শেষ স্টপেজে গিয়েও থামবে না। অগত্যা কী আর করা! সুপারভাই সুপারম্যানের মতো মনে মনে শক্তি অর্জন করে দিল জোরে এক ধাক্কা। সঙ্গে সঙ্গে নাকডাকা থেমে গেল। চাচা থতমত খেয়ে উঠে বসলেন। বলল, কী হইছে ভাই আমাকে এত জোরে ধাক্কা দিলেন কেন? আমার ঘুম ভাঙাইলেন কেন? আমি কী আপনার গাড়িতে ফ্রি ফ্রি উঠছি? না ফ্রি ফ্রি ওঠেন নাই। তবে আমরা তো ঘোষণা দেই নাই যে এই গাড়িতে উঠলে ঘুমের সঙ্গে নাকডাকা ফ্রি! চাচা বললেন, ওই মিয়া নাক কি আমি বাড়িতে তালা দিয়া রাইখ্যা আসুম? সুপার ভাই বলল, চাচা গাড়িতে ঘুমাতে পারবেন কিন্তু নাক ডাকাতে পারবেন না। মাঝের সিটে বসা এক যাত্রী বলল, ভাই এবার থামেন। এদিকে আসেন। আমাকে একটি কম্বল দেন। শীত লাগছে। আচ্ছা দেখছি। এই কথা বলে সুপারভাইজার গাড়ির বক্সে বক্সে কম্বল খুঁজতে লাগল।
গাড়ি সাঁইসাঁই করে এগিয়ে চলেছে। মধ্যরাত। সবার চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু। কিন্তু চাচার চোখে ঘুম নেই। চাচা জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরে দেখার চেষ্টা করে। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। দূরপাল্লার গাড়ির আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। গাড়ি থেকে কখন নামবে চাচা সে কথাই ভাবতে থাকে। ভাবতে থাকে চাচির কথা। মনে মনে বলতে থাকে— তোমার বকার ঠেলায় বাড়িতেও একটু শান্তিমতো ঘুমাতে পারি না। এখানেও ঘুমাতে পারলাম না। হায় আল্লা আমার ঘুম দাও। ঘুম দাও আল্লা। ঘুম আসার জন্য চাচা উল্টো দিক থেকে সংখ্যা গুনতে শুরু করল— ৯৯, ৯৮, ৯৭, ৯৬, ৯৫…।
গাড়ির গতি প্রতি ঘণ্টায় চলছে ১০০, ১০৫, ১১০, ১১৫ মাইল বেগে। দেখতে দেখতে ভোর হয়ে গেল। প্রায় সবাই কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমে কাতর। কেউ কেউ আবার না ঘুমাতে পারার শোকে পাথর। সুপারভাইজার ঘুমন্ত একজন প্যাসেঞ্জারের দুই কাঁধ ঝাঁকাচ্ছে আর বলছে— স্যার ওঠেন। আমরা চলে এসেছি। সঙ্গে সঙ্গে সেই প্যাসেঞ্জার কম্বল সরালেন। রেগে-মেগে বললেন, স্যার না ম্যাডাম বলেন। আপনি আমার গায়ে হাত দিলেন কেন? আপনার সাহস তো কম নয়। আপনাকে কে বলেছে গায়ে হাত দিয়ে ঘুম ভাঙাতে। অসভ্য কোথাকার। নিস্তব্ধ গাড়িতে হঠাৎ এমন চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙল ফরিদ সাহেবের। ঘুমজড়ানো কণ্ঠে ফরিদ চাচা বলে উঠলেন, থামেন। আপনাদের জ্বালায় একটু শান্তিতে ঘুমাতেও পারলাম না। আমার টাকা ফেরত দেন। এই গাড়িতে শুধু টিকিট কেটেছি শান্তিতে একটু ঘুমানোর জন্য। কিন্তু আপনাদের ঠেলায় তা আর পারলাম না। নিকুচি ‘কুচি’ ‘কুচি’ করি এই এসি গাড়ির। নিকুচি করি।
বাংলা একাডেমি, ঢাকা থেকে

শেয়ার FacebookThreadsBluesky

আরও যেসব নিউজ পড়তে পারেন

গাড়ি চুরি রহস্য :: বিশ্বজিৎ দাস

July 16, 2025

ডিডাব্লিউ থেরাপি :: শাহনেওয়াজ চৌধুরী

July 16, 2025

আমাদের সাদা বাড়িতে একজন লাল অতিথি আসবেন :: শফিক হাসান

July 14, 2025

রগচটা বদরুল :: আব্দুল খালেক ফারুক

July 14, 2025

সৈয়দ মুজতবা আলীর রম্যরচনা ‘খোশগল্প’

July 12, 2025

সাম্প্রতিক খবর

  • জনসমর্থন কমেছে ট্রাম্পের

    July 30, 2025
  • ভূমিকম্পের পর সুনামি নিয়ে উৎকণ্ঠা

    July 30, 2025
  • ‘বাংলাদেশে আমার হৃদয়ের অনেকটা অংশ রয়ে গেছে’ হামজা চৌধুরী

    July 29, 2025
  • মালিবাগ থেকে অপহৃত যুবকের সন্ধান মেলেনি ১০ দিনেও

    July 29, 2025
  • ডাকসু নির্বাচন ৯ সেপ্টেম্বর

    July 29, 2025

BDOUTLOOK.COM

নির্বাহী সম্পাদক : কাদের বাবু

  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার

bdoutlook2@gmail.com

  • Privacy Policy
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
    • জাতীয়
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • রাজশাহী
    • বরিশাল
    • সিলেট
    • রংপুর
    • ময়মনসিংহ
  • বিশ্ব
  • প্রবাস
    • আমেরিকা
    • ইউরোপ
    • মধ্যপ্রাচ্য
    • আফ্রিকা
    • এশিয়া
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • ফিচার
    • শিল্পসাহিত্য
      • কবিতা ও ছড়া
      • গল্প
      • প্রবন্ধ-আলোচনা
      • রম্য
      • শিশুসাহিত্য
      • শিল্পসাহিত্যের খবর
    • তথ্যপ্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • ট্যুরিজম
    • ধর্ম
    • স্বাস্থ্য
    • ক্যাম্পাস
    • নারী
  • অপরাধ আইন আদালত
  • সাক্ষাৎকার