BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
  • বিশ্ব
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • শিল্পসাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • প্রবন্ধ-আলোচনা
    • সাহিত্যের খবর
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
  • বিশ্ব
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • শিল্পসাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • প্রবন্ধ-আলোচনা
    • সাহিত্যের খবর
শিরোনাম
২০২৬ সালের রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন? ইউনূস-তারেক বৈঠকে ইঙ্গিত
কী কথা হলো?
বাণিজ্য যুদ্ধে বিশ্ব!
টাইম ট্রাভেল কি বাস্তবে সম্ভব
ইউনূস ও মোদির বৈঠকে কৌতূহল
Saturday | July 5 | 2025
BDOUTLOOK
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
  • বিশ্ব
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • শিল্পসাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • প্রবন্ধ-আলোচনা
    • সাহিত্যের খবর

News 24 Hours BDOUTLOOK.COM

প্রবন্ধ-আলোচনা

বাংলা সাহিত্যে ডান-বামের অস্তিত্ব ও সংকট :: জসীম উদ্দীন মুহম্মদ

বিডিআউটলুক July 5, 2025
July 5, 2025
7

মাঝে মধ্যে মন যখন খুব বেশি বিক্ষিপ্ত হয় তখন আমি হয় মাটির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি অথবা বিশাল আকাশের কোনো এক কোণে অত্যন্ত মন্থর পায়ে হাঁটতে থাকি। যদি এরই মধ্যে মন কিছুটা ভালো হয়তো ভালো; আর যদি ভালো না হয় তাহলে রুমের দরজা জানলা ভিজিয়ে একচোখ বন্ধ এবং আরেক চোখ খোলা রেখে শুয়ে থাকি। তাতে যদি কাজ হয় তো ভালো, আর যদি তাতেও কাজ না হয় তখন প্রিয় বইয়ের তালিকা থেকে কোনো একটির চর্বিত চর্বণ করতে থাকি। এই হলাম মোটামুটি আমি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই তো প্রশ্ন ওঠে হঠাৎ কেন আমি বিক্ষিপ্ত মনের ফিরিস্তি দেওয়া শুরু করলাম। মন যেহেতু আছে, সে তো ভালো-মন্দ উভয়ই হতে পারে। যে মানুষের মন ভাঙা কিংবা গড়া হয় না সেও তো মানুষ; তবে আমার মতে সে মৃত মানুষ। মৃত মানুষের মনের কোনো জোয়ার-ভাটা নেই অথবা থাকলেও তা জীবিতদের জ্ঞান সীমার বাইরে। তবে আমি যেহেতু জীবিত এবং মৃত এই দুইয়ের মাঝখানের জীবন্মৃত মানুষ তাই আমার মনের সুখ-দুঃখ আছে বৈকি! তেমনি একটি দুঃখের গান গাওয়ার ইচ্ছে থেকেই আজকের এই লেখার অবতারণা।
বছর দুয়েক আগের ঘটনা। হাজারবার ভুলতে চেয়েও পারিনি। বলা যায়, ‘যতই ভুলতে চাই; ততই মনে পড়ে’ টাইপের একটা দুঃসহ অবস্থা। মা তখন গুরুতর অসুস্থ। মাকে দেখার জন্য শহর ছেড়ে গ্রামে গিয়েছি। তখন রাত নয়টা কি সাড়ে নয়টা বাজে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম। এমন সময় মোবাইল বাজতে লাগল। অপরিচিত নাম্বার। রিসিভ করব কি করব না ভাবতে ভাবতে রিসিভ করলাম। হ্যালো… জি, জসীম উদ্দীন মুহম্মদ বলছেন? জি…জি। আপনি কে বলছেন প্লিজ?
হি হি… একটা দিগম্বর এবং জঘন্য হামবড়া হাসি দিয়ে বলল, আমি অমুক পত্রিকার সাহিত্য পাতার সম্পাদক।
তার ভাবসাব আমার কাছে খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছিল না। কিছু একটা গণ্ডগোল গণ্ডগোল লাগছে। তবুও বললাম, আপনি ভালো আছেন ভাই?
হি হি হি… আবারও সেই দিগম্বর হাসি! যেন থামতেই চায় না। কয়েক লোকমা সময় পরে বলল, কেমনে ভালো থাকি ভাই। আপনারা তো ভালো থাকতে দেন না।
আমি অবাক হয়ে বললাম, কেন কী হয়েছে ভাই? একটু খুলেই বলুন না…।
সেদিন দেখলাম অমুক পত্রিকায় আপনার কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। যেহেতু এই পত্রিকায় আপনি লিখেছেন, তাহলেও তো আপনি অমুক অমুক পত্রিকায়ও লিখেন নিশ্চয়ই।
উনার একপেশে আবেগ আর উত্তেজনার কাছে আমি পরাজিত হলাম। তাই পালটা জবাব না দিয়ে চুপ করে শুনতে লাগলাম।
উনি আবারও ওনার ভেতরের ঝাল উগড়াতে থাকলেন। শুনেন ভাই, সোজা কথা বলি, আপনি যদি ওইসব পত্রিকায় লিখেন; তাহলে আর আমাদের পত্রিকায় লেখা পাঠাবেন না। বুঝতেই তো পারছেন তাদের চেতনার সাথে আমাদের চেতনা যায় না।
আমি একটু না বুঝার ভান করে বললাম, কোন চেতনার কথা বলছেন ভাই? একটু বুঝিয়ে দিলে ভালো হতো।
ফোনে সব কথা বলা যায় না? মনে রাখবেন, ডান-বাম হইল সাপ আর নেউলের মতন। আপনি কি ডানে লিখবেন নাকি বামে লিখবেন সেইটা আগে ঠিক করুন। তারপর পত্রিকায় লেখালেখি করুন।
এইটুকু বলেই তিনি আবারও ওনার সেই দিগম্বর হাসিটা হেসে ঘ্যাচাং করে লাইন কেটে দিলেন। তবে এরই মধ্যে উনি আরও কিছু কথা উচ্চারণ করেছেন; যা আমি এখানে উদ্ধৃত করিনি। কারণ আমি মনে করি, এগুলো উদ্ধৃত করা আর ডান হাতে মানুষের মল কচলানো একই কথা। উনি মল কচলিয়ে সুখ পেয়েছেন বলে আমারও কচলাতে হবে এমন কোনো কথা আমার অভিধানে নেই।
যাক সেই থেকেই মনের ভেতর একটা দীর্ঘ বমিটিং ভাব; কিন্তু বমি করতে সাহস পাচ্ছি না। বমি বমি ভাব অথচ বমি হচ্ছে না; এই ধরনের দুঃসহ পরিস্থিতির কী যে জ্বালা তা সবার পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। আমি মনে করি তা কেবল ভুক্তভোগীরাই টের পেয়ে থাকবেন। স্বীকার করছি, এই যে আমি এতদিন ধরে সেদিনের ফোনালাপের অশিষ্ট বমি না করে হজমের প্রচেষ্টা করেছি; আমি মনে করি তাও একপ্রকার দুষ্কর্ম। উচিত ছিল সাথে সাথে উগড়াইয়া দেওয়া। তাহলে ইটের বদলে পাটকেল দেওয়া হতো বৈকি। কিন্তু অভদ্র হওয়ার চরম শিক্ষাটি আমাকে পারিবারিকভাবেই দেওয়া হয়নি। তবুও আজ সামান্য কিছু উগড়াইতে পেরে নিজেকে কিছুটা হালকা লাগছে। প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আমার আজকের লেখার শিরোনাম ‘বাংলা সাহিত্যে ডান-বামের অস্তিত্ব এবং সংকট’ এর আসল হেতু।
আমি আজন্ম আলাভোলা মানুষ। সবসময় সরলরেখার মতন সোজা পথে চলি। ডান-বাম তেমন একটা বুঝি না। যদিও জীবনের একটা লম্বা সময় এই ডান-বাম নিয়ে পড়াশোনা করেছি। কিন্তু আমার অবলা মনের বিশ্বাস ছিল এই ডান-বাম শব্দ দুটির জন্ম হয়েছে কেবল রাজনীতির জন্য। কিন্তু উজানি কৈ মাছের মতন এরা যে সাহিত্য জগৎ দাপিয়ে বেড়াতে পারে; ইহা আমার অননুমেয় ছিল। তবে এই কথিত সাহিত্য সম্পাদকের ফোন পাওয়ার পর সেই আমিও নতুন করে এই নিয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি। আমার সুগভীর বিশ্বাস ছিল, সাহিত্য পৃথিবীর সবচেয়ে নির্মল জায়গা। অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিষ্কলুষ প্লাটফরম। এখানে কোনো শ্রেণিভেদ নেই, জাতি ভেদ নেই, মুসলিম-হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নেই। বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামাত, খেলাফত নেই। সাহিত্যের এই মাঠ সবার জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত। এখানে কেবল একটা বিষয়ই পার্থক্য গড়ে দিবে; আর তা হলো ভালো মানের লেখা। যার লেখা ভালো মানের তার লেখা জাতি-কুল, ডান-বাম নির্বিশেষে পত্রিকার পাতায় স্থান লাভ করবে। যাদের লেখা সাহিত্য মানের দিক থেকে পিছিয়ে আছে, সাহিত্য সম্পাদক তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, সাহিত্য সম্পাদক পরামর্শ দিবেন তো দূরের কথা তারা নিজেরাই বিভাজন উসকে দেন। নিজেদের পন্থী কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে নির্লজ্জ সিন্ডিকেট তৈরি করেন। এই সিন্ডিকেট এর বাইরের কারো লেখা তারা সহজে প্রকাশ করেন না। এমনকি কি ফোন দিয়ে অপমান অপদস্ত করেন। যার শিকার আমি নিজেই!
আমার ক্ষুদ্র সাহিত্য জীবনের আরও একটি বিরল ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলাম না। প্রকৃতপক্ষে আমার সার্টিফিকেট নেইম জসীম উদ্দীন। যেহেতু বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট কবির নামের সাথে হুবহু মিলে যায় সেজন্য আমি একজন সিনিয়র ভাইয়ের পরামর্শে আমার নামের শেষ মুহম্মদ যুক্ত করি। যাতে করে পল্লীকবি জসীম উদদীন এর সাথে আলাদা করা যায়। অবশ্য নামের শেষে মুহম্মদ যুক্ত না করে অন্যকিছুও যুক্ত করা যেত। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আমি মুহম্মদ যুক্ত করাটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি। তাছাড়া মুহম্মদ সারাবিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় নামও বটে। অতঃপর পরিতাপের সমুদ্রে হাবুডুবু খেয়ে বলতে হচ্ছে, নামের শেষে মুহম্মদ যুক্ত করে আমি এক বিরাট এবং অমার্জনীয় অপরাধ করে ফেলেছি। চরম অপ্রিয় সত্য বেশ কিছু পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক নামের শেষে মুহম্মদ থাকায় আমার লেখা প্রকাশ না করে এড়িয়ে যান। নিতান্ত আপন অথবা উদার নৈতিক মনোবৃত্তির কারণে দুই-একজন যখন আমাকে রিকোয়েস্ট করে বলেন, ভাই আপনার লেখা তো খুব ভালো। তবে নামের শেষে মুহম্মদ দিয়েছেন কেন? এটা বাদ দিয়ে দেন ভাই। অন্যভাবে নিবেন না আপনার মঙ্গলের জন্যই আমার বলা। এই যখন অবস্থা তখন কি আমার কিছু বুঝতে বাকি থাকে? এই দেশে এখনও মুহম্মদ নামের প্রতি অনেকের এলার্জি আছে আমার জানা ছিল না! আরও ভয়ংকর ব্যাপার হলো, একটি পত্রিকায় আমি লেখা পাঠিয়েছি। লেখাটি প্রকাশিতও হয়েছে। কিন্তু লেখকের নাম দেওয়া হয়েছে জসীম উদ্দীন। মুহম্মদ বাদ! সম্মানিত সাহিত্য সম্পাদক কি একজন লেখকের নাম কাটাছেঁড়া করার অধিকার রাখেন? বিষয়টি আমার ভালো জানা নেই। আমি যতটা জানি, সম্পাদক লেখায় প্রয়োজনীয় ঘষামাজা করতে পারেন। তিনি সেই অধিকার পদাধিকার বলে সংরক্ষণ করেন। তিনি ইচ্ছে করলেই আমার লেখাটি না ছাপাতে পারতেন। আর না ছাপালে আমারও এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা অনুযোগ দায়ের করার ন্যূনতম হকও থাকত না। কারণ লেখা ওনার পছন্দ নাও হতে পারে। কিন্তু নামের অংশ বিশেষ যখন অনুমতি ব্যতিরেকে কাটছাঁট করা হলো; তখন আমার বুকের ভেতর চিনচিন করে বৈকি!
আচ্ছা, এতক্ষণ যা বললাম অর্থাৎ আমার সাথে যা যা করা হলো তা কি ডান-বামের কারণে? নাকি এর জন্য কিছু সাহিত্য সম্পাদকের অনুদার এবং সংকীর্ণ মানসিকতা বা দৃষ্টিভঙ্গি দায়ী? আমি মনে করি, এর যে কোনোটাই হতে পারে? তবে আমি সবিনয়ে জানতে চাই, সাহিত্যের মতো নির্মল জায়গাটিতে যখন ডান-বামের চর্চা হয়; তখন কি তা সাহিত্য থাকে? নাকি সাহিত্যও রাজনীতির মাঠ হয়ে দাঁড়ায়? রাজনীতিতে যেমন হানাহানি, বিদ্বেষ, মতবিরোধ ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে জনমনের অস্থিরতা থেকে গোটা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়; সাহিত্যে হয়তো ততটা হয় না। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সাহিত্যে ডানপন্থী-বামপন্থী বিভাজন জাতির জন্য কখনও সুফল বয়ে আনবে না। বরং একটা সময় দেশের সুশীল সমাজের মধ্যে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। যা কোনো সভ্য জাতির জন্য কাম্য নয়। কাম্য হতে পারে না। সাহিত্যকে বলা হয় সমাজ, জাতি বা সভ্যতার দর্পণ। এই স্বচ্ছ কাচের ন্যায় সাহিত্য নামের আয়নায় চোখ রাখলে যদি ডান-বাম নামের কুৎসিত মুখচ্ছবির বিদঘুটে হাসি দেখা যায়; তখন সেখানে সাহিত্য চর্চার নামে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক কিছু কবি এবং লেখকের স্বৈরাচারী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মাত্র। তাতে করে সাহিত্য সমাজ অহেতুক ও অনাকাক্সিক্ষতভাবে অনেক বৈরিতার মুখোমুখি হয় এবং ভবিষ্যতেও হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডানপন্থীদের দ্বারা বামপন্থীরা অবহেলিত হবে, নিপীড়িত হবে, প্রাপ্য অধিকার থেকে যেমন বঞ্চিত হবে; অনুরুপভাবে বামপন্থীদের দ্বারাও ডানপন্থীরা তদ্রুপ বৈষম্যপূর্ণ আচরণের শিকার হবে এবং হচ্ছে। আর এর পরিণাম একজন কবি এবং সাহিত্যিকের সাথে অন্য আরেকজন কবি এবং সাহিত্যিকের বিভেদ এবং বৈরিতার মুখোমুখি হওয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়। সাহিত্যের মতোন সুনির্মল এবং পরিচ্ছন্ন প্লাটফরমে এটা চরম অনাকাক্সিক্ষত। বিষয়টা অনেকটা এমন যে, আমি ঢাকা যাব বলে লক্ষ্য স্থির করেছি। কিন্তু আমাকে বলা হলো, আপনি এই রাস্তায় যেতে পারবেন না। অন্য কোনো রাস্তা দিয়ে আপনাকে যেতে হবে। বাস্তবিক পক্ষে এমনটা কি মেনে নেওয়া সম্ভব? সোজা উত্তর সম্ভব নয়। কিন্তু আমি মেনে নিচ্ছি অথবা আমাকে মেনে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যথায় আমার ঢাকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে অর্থাৎ লেখালেখির জগৎ থেকে বিদায় নিতে হবে। রাজনীতির মাঠ হলে এইরকম পরিস্থিতি মেনে নেওয়া যেত; কিন্তু সাহিত্যে যখন এমনটা ঘটে তখন তা মেনে নেওয়া অত্যন্ত পীড়াদায়ক বটে।
বাংলা সাহিত্যে ডান-বামের এই যে অস্তিত্ব তার প্রভাব এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রতিপত্তি অসংখ্য কারণে আমাদের সাহিত্য সমাজে বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি করেছে এবং করবে। তৈরি হবে চরম মতদ্বৈধতা ও গভীর সংকট। যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো লেখকের স্বাধীনতা এবং মন, মানস ও চিন্তনে অযাচিত হস্তক্ষেপ। এই বিভেদের কারণে একজন কবি এবং লেখক স্পষ্টত পরাধীন হবেন। নিজস্ব চিন্তা, চেতনার বহিঃপ্রকাশ না ঘটাতে পেরে তার সামগ্রিক সত্তার ওপর যে মারাত্মক প্রভাব পড়বে; তা তার সাহিত্য জীবনকে খুন করার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। মূলত একজন কবি কিংবা লেখক তার লেখার মাধ্যমে নিজস্ব চিন্তা, চেতনা এবং দর্শন পাঠকের চিত্তে এবং বিত্তে ছড়িয়ে দেন। ফলশ্রুতিতে তার কিছু ভক্ত এবং অনুরাগী জন্ম নেয়। যারা তাকে মৃত্যুর পরেও যুগ থেকে যুগান্তর বাঁচিয়ে রাখেন। এজন্য বলা হয়ে থাকে লেখকেরা মরেও পাঠকের মাঝে অনন্তকাল বেঁচে থাকেন। কিন্তু লেখকের মতো পাঠকও যদি ডানপন্থী কিংবা বামপন্থী হয়; তাহলে আমরা যারা মধ্য এবং উদারপন্থী আছি; আমাদের অবস্থা কী হবে? সম্মানিত পাঠক যদি এই বিভাজনের রকমফেরে পড়ে বই হাতে নেওয়ার আগেই লেখককে ডানপন্থী কিংবা বামপন্থী লেখক বা কবি মনে করে কুত্তার বাচ্চা বলে গালমন্দ করেন; তখন এই গালাগালির দায় কে নিবেন? আজকে যারা সাহিত্যে ডানপন্থী এবং বামপন্থী বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনীতিবিদের স্টাইলে ফায়দা লুটছেন, তারা কি এর দায় নিবেন? আমার ধারণা, কেউ এর দায় নিবেন না। তখন সবাই সচেতনে অথবা অবচেতনে এড়িয়ে যাবেন অথবা রাজনীতিবিদদের মতন প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে লাঠালাঠি শুরু করে দিবেন।
বাংলা সাহিত্যের অতীত এবং বর্তমান ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অনেক বড় বড় কবি এবং লেখককেও এই ডান-বামের তকমা গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র এই আজগুবি কারণে অনেকেই একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পদক, এমনকি স্বাধীনতা পদকসহ অন্যান্য অনেক পুরস্কার থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন। যতদূর জানি, তাদের কেউ কেউ গা থেকে এই ডান-বামের গন্ধ দূর করার জন্য চেষ্টা তদবির করেও কূলকিনারা করতে পারেননি। অনেকে আবার নিজের নাম পরিবর্তন করে ছদ্মনাম ধারণ করে লিখেছেন কিংবা লিখছেন। আবার কেউ কেউ ছদ্মনামের সাথে মুসলিম, হিন্দু কিংবা অন্যধর্মীয় নামের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন; যাতে করে পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক কিংবা কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। আবার অনেকে এমনও আছেন যে কাকের মতন চোখ বন্ধ রেখে নীরবে-নিভৃতে কোনোরকমে দিনাতিপাত করছেন। তারা ডান-বাম নামের এই সাহিত্য বাণিজ্যের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে বলতে হচ্ছে বাংলা সাহিত্যের দুই মহানায়ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলাম নিজেরাও এই ডান-বাম নামের বৈষম্যের শিকার। আজও দুই বাংলায় এমন অনেক সংকীর্ণ মানুষ আছেন যারা তাদেরও সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকুপে বন্দি করে রেখেছেন এবং সাম্প্রদায়িকতার দেয়াল তুলে তাদের নিয়ে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। রবীন্দ্র এবং নজরুল পরবর্তী আরও অনেক বড় বড় কবি সাহিত্যিক আছেন, যারা এই ডান-বামের শিকার হয়ে আজীবন বঞ্চিত থেকে গেছেন। আর এই বঞ্চনার মাত্রা এতটা তীব্র এবং ভয়ংকর যে, মৃত্যুর পরেও এই ডান-বাম তাদের পিছু ছাড়েননি। কাউকে কাউকে তো আবার প্রত্যাশিত কবর স্থানে দাফনও করতে দেওয়া হয়নি। ভাবা যায়! কী ভয়ানক ঘৃণ্য বর্বরোচিত সংকীর্ণ মানসিকত!
আমার বক্তব্য খুবই স্পষ্ট, সাহিত্যে রাজনীতি টেনে এনে ডানপন্থী এবং বামপন্থী কবি লেখক তকমা দিয়ে যারা ফায়দা লুটছেন; তারা কি তথাকথিত চরমপন্থী নয়? তারা কি সাহিত্যে চেতনা বিক্রি করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করছেন না? এখানেই শেষ নয়, সাদাসিধা, নিরীহ কবি এবং লেখকদের অপমান, অপদস্থ করে তারা পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করছেন! নিজ হাতে কৃত্রিম শ্রেণিভেদ ও সিন্ডিকেট তৈরি করে তারা দিনের পর দিন অন্যদের হাসি-তামাশার পাত্র বানিয়ে মজা নিচ্ছেন! এই তারাই আবার নিজেদের সাহিত্য রাজ্যের স্বঘোষিত সম্রাট মনে করে রাজস্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান বৈষম্যহীন বাংলাদেশেও এদের দৌরাত্ম্য কিছুমাত্র কমেনি। এখনও তারা অনেক নিরীহ কবি ও লেখকদের নানাভাবে হুমকি ধামকি এবং হয়রানি করে যাচ্ছেন; যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত। এসব কিছুর ফলশ্রুতিতে যে সংকট তৈরি হচ্ছে তা আরও ভয়াবহ। অনেক কবি ও লেখক নিজেদের আত্মসম্মান বাঁচানোর জন্য লেখালেখির জগৎ থেকে নীরবে বিদায় নিচ্ছেন। অপমান ও অপদস্ত হওয়ার ভয়ে এবং আতংকে কেউ কেউ আবার মানসিক ট্রমায় ভুগছেন। এই আমার কথাই ধরা যাক কেন, আমার কাছে সেই ফোন আসার পর থেকে আমি অনেকদিন নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাতে পারিনি। তথাকথিত সেই সাহিত্য সম্পাদকের বিঘাইড়া হাসির কথা মনে হলে আমার এখনও পিলে চমকে যাওয়ার যোগাড় হয়। তার শ্রীহীন কথা-বার্তা আমার কানে এখনো বিষ পাথরের মতন বিদ্ধ হয়। সেই ঘটনার পর থেকে প্রায় দুই বছর হতে চলল; অথচ আজও আমি তা ভুলতে পারিনি। এতে হয়তো বাংলা সাহিত্যে ডান-বাম পরিস্থিতির মারাত্মক প্রভাব কিছুটা হলেও অনুমেয়।
এই লেখাটির কি এখানেই ইতি হবে? অথচ আমার ভেতরে এখনো একটি জগদ্দল পাথর হাঁটু গেড়ে বসে আছে। ঠেলাধাক্কা দিয়েও তাকে স্থানচ্যুত করতে পারছি না। আচ্ছা, বাংলা সাহিত্যে ডান, বামের অস্তিত্ব এবং সংকট সম্পর্কে আমরা সবাই কি কম-বেশি জানি না? আমার ধারণা, সবাই কম-বেশি জানি। তবুও আমরা অনেকেই এই বিভেদের এবং বিদ্বেষের অবসান চাই না। বরং একে জিইয়ে রেখে আমাদের কেউ কেউ ব্যক্তি, গোষ্ঠী অথবা দলগত স্বার্থ হাসিল করতে চায়। অর্থাৎ ডান-বাম শব্দদ্বয়কে বাংলা সাহিত্যে একটি হাতিয়ার বা মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। যা কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে। যদিও সবাই আমরা জানি, এই বৈষম্যের পরিণতি কারো জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে না..!
সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ থেকেবাংলা সাহিত্যে ডান-বামের অস্তিত্ব ও সংকট :: জসীম উদ্দীন মুহম্মদ

মাঝে মধ্যে মন যখন খুব বেশি বিক্ষিপ্ত হয় তখন আমি হয় মাটির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি অথবা বিশাল আকাশের কোনো এক কোণে অত্যন্ত মন্থর পায়ে হাঁটতে থাকি। যদি এরই মধ্যে মন কিছুটা ভালো হয়তো ভালো; আর যদি ভালো না হয় তাহলে রুমের দরজা জানলা ভিজিয়ে একচোখ বন্ধ এবং আরেক চোখ খোলা রেখে শুয়ে থাকি। তাতে যদি কাজ হয় তো ভালো, আর যদি তাতেও কাজ না হয় তখন প্রিয় বইয়ের তালিকা থেকে কোনো একটির চর্বিত চর্বণ করতে থাকি। এই হলাম মোটামুটি আমি। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই তো প্রশ্ন ওঠে হঠাৎ কেন আমি বিক্ষিপ্ত মনের ফিরিস্তি দেওয়া শুরু করলাম। মন যেহেতু আছে, সে তো ভালো-মন্দ উভয়ই হতে পারে। যে মানুষের মন ভাঙা কিংবা গড়া হয় না সেও তো মানুষ; তবে আমার মতে সে মৃত মানুষ। মৃত মানুষের মনের কোনো জোয়ার-ভাটা নেই অথবা থাকলেও তা জীবিতদের জ্ঞান সীমার বাইরে। তবে আমি যেহেতু জীবিত এবং মৃত এই দুইয়ের মাঝখানের জীবন্মৃত মানুষ তাই আমার মনের সুখ-দুঃখ আছে বৈকি! তেমনি একটি দুঃখের গান গাওয়ার ইচ্ছে থেকেই আজকের এই লেখার অবতারণা।
বছর দুয়েক আগের ঘটনা। হাজারবার ভুলতে চেয়েও পারিনি। বলা যায়, ‘যতই ভুলতে চাই; ততই মনে পড়ে’ টাইপের একটা দুঃসহ অবস্থা। মা তখন গুরুতর অসুস্থ। মাকে দেখার জন্য শহর ছেড়ে গ্রামে গিয়েছি। তখন রাত নয়টা কি সাড়ে নয়টা বাজে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম। এমন সময় মোবাইল বাজতে লাগল। অপরিচিত নাম্বার। রিসিভ করব কি করব না ভাবতে ভাবতে রিসিভ করলাম। হ্যালো… জি, জসীম উদ্দীন মুহম্মদ বলছেন? জি…জি। আপনি কে বলছেন প্লিজ?
হি হি… একটা দিগম্বর এবং জঘন্য হামবড়া হাসি দিয়ে বলল, আমি অমুক পত্রিকার সাহিত্য পাতার সম্পাদক।
তার ভাবসাব আমার কাছে খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছিল না। কিছু একটা গণ্ডগোল গণ্ডগোল লাগছে। তবুও বললাম, আপনি ভালো আছেন ভাই?
হি হি হি… আবারও সেই দিগম্বর হাসি! যেন থামতেই চায় না। কয়েক লোকমা সময় পরে বলল, কেমনে ভালো থাকি ভাই। আপনারা তো ভালো থাকতে দেন না।
আমি অবাক হয়ে বললাম, কেন কী হয়েছে ভাই? একটু খুলেই বলুন না…।
সেদিন দেখলাম অমুক পত্রিকায় আপনার কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। যেহেতু এই পত্রিকায় আপনি লিখেছেন, তাহলেও তো আপনি অমুক অমুক পত্রিকায়ও লিখেন নিশ্চয়ই।
উনার একপেশে আবেগ আর উত্তেজনার কাছে আমি পরাজিত হলাম। তাই পালটা জবাব না দিয়ে চুপ করে শুনতে লাগলাম।
উনি আবারও ওনার ভেতরের ঝাল উগড়াতে থাকলেন। শুনেন ভাই, সোজা কথা বলি, আপনি যদি ওইসব পত্রিকায় লিখেন; তাহলে আর আমাদের পত্রিকায় লেখা পাঠাবেন না। বুঝতেই তো পারছেন তাদের চেতনার সাথে আমাদের চেতনা যায় না।
আমি একটু না বুঝার ভান করে বললাম, কোন চেতনার কথা বলছেন ভাই? একটু বুঝিয়ে দিলে ভালো হতো।
ফোনে সব কথা বলা যায় না? মনে রাখবেন, ডান-বাম হইল সাপ আর নেউলের মতন। আপনি কি ডানে লিখবেন নাকি বামে লিখবেন সেইটা আগে ঠিক করুন। তারপর পত্রিকায় লেখালেখি করুন।
এইটুকু বলেই তিনি আবারও ওনার সেই দিগম্বর হাসিটা হেসে ঘ্যাচাং করে লাইন কেটে দিলেন। তবে এরই মধ্যে উনি আরও কিছু কথা উচ্চারণ করেছেন; যা আমি এখানে উদ্ধৃত করিনি। কারণ আমি মনে করি, এগুলো উদ্ধৃত করা আর ডান হাতে মানুষের মল কচলানো একই কথা। উনি মল কচলিয়ে সুখ পেয়েছেন বলে আমারও কচলাতে হবে এমন কোনো কথা আমার অভিধানে নেই।
যাক সেই থেকেই মনের ভেতর একটা দীর্ঘ বমিটিং ভাব; কিন্তু বমি করতে সাহস পাচ্ছি না। বমি বমি ভাব অথচ বমি হচ্ছে না; এই ধরনের দুঃসহ পরিস্থিতির কী যে জ্বালা তা সবার পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। আমি মনে করি তা কেবল ভুক্তভোগীরাই টের পেয়ে থাকবেন। স্বীকার করছি, এই যে আমি এতদিন ধরে সেদিনের ফোনালাপের অশিষ্ট বমি না করে হজমের প্রচেষ্টা করেছি; আমি মনে করি তাও একপ্রকার দুষ্কর্ম। উচিত ছিল সাথে সাথে উগড়াইয়া দেওয়া। তাহলে ইটের বদলে পাটকেল দেওয়া হতো বৈকি। কিন্তু অভদ্র হওয়ার চরম শিক্ষাটি আমাকে পারিবারিকভাবেই দেওয়া হয়নি। তবুও আজ সামান্য কিছু উগড়াইতে পেরে নিজেকে কিছুটা হালকা লাগছে। প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আমার আজকের লেখার শিরোনাম ‘বাংলা সাহিত্যে ডান-বামের অস্তিত্ব এবং সংকট’ এর আসল হেতু।
আমি আজন্ম আলাভোলা মানুষ। সবসময় সরলরেখার মতন সোজা পথে চলি। ডান-বাম তেমন একটা বুঝি না। যদিও জীবনের একটা লম্বা সময় এই ডান-বাম নিয়ে পড়াশোনা করেছি। কিন্তু আমার অবলা মনের বিশ্বাস ছিল এই ডান-বাম শব্দ দুটির জন্ম হয়েছে কেবল রাজনীতির জন্য। কিন্তু উজানি কৈ মাছের মতন এরা যে সাহিত্য জগৎ দাপিয়ে বেড়াতে পারে; ইহা আমার অননুমেয় ছিল। তবে এই কথিত সাহিত্য সম্পাদকের ফোন পাওয়ার পর সেই আমিও নতুন করে এই নিয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি। আমার সুগভীর বিশ্বাস ছিল, সাহিত্য পৃথিবীর সবচেয়ে নির্মল জায়গা। অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিষ্কলুষ প্লাটফরম। এখানে কোনো শ্রেণিভেদ নেই, জাতি ভেদ নেই, মুসলিম-হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নেই। বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামাত, খেলাফত নেই। সাহিত্যের এই মাঠ সবার জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত। এখানে কেবল একটা বিষয়ই পার্থক্য গড়ে দিবে; আর তা হলো ভালো মানের লেখা। যার লেখা ভালো মানের তার লেখা জাতি-কুল, ডান-বাম নির্বিশেষে পত্রিকার পাতায় স্থান লাভ করবে। যাদের লেখা সাহিত্য মানের দিক থেকে পিছিয়ে আছে, সাহিত্য সম্পাদক তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিবেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, সাহিত্য সম্পাদক পরামর্শ দিবেন তো দূরের কথা তারা নিজেরাই বিভাজন উসকে দেন। নিজেদের পন্থী কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে নির্লজ্জ সিন্ডিকেট তৈরি করেন। এই সিন্ডিকেট এর বাইরের কারো লেখা তারা সহজে প্রকাশ করেন না। এমনকি কি ফোন দিয়ে অপমান অপদস্ত করেন। যার শিকার আমি নিজেই!
আমার ক্ষুদ্র সাহিত্য জীবনের আরও একটি বিরল ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার না করে পারলাম না। প্রকৃতপক্ষে আমার সার্টিফিকেট নেইম জসীম উদ্দীন। যেহেতু বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট কবির নামের সাথে হুবহু মিলে যায় সেজন্য আমি একজন সিনিয়র ভাইয়ের পরামর্শে আমার নামের শেষ মুহম্মদ যুক্ত করি। যাতে করে পল্লীকবি জসীম উদদীন এর সাথে আলাদা করা যায়। অবশ্য নামের শেষে মুহম্মদ যুক্ত না করে অন্যকিছুও যুক্ত করা যেত। কিন্তু একজন মুসলিম হিসেবে আমি মুহম্মদ যুক্ত করাটাকেই প্রাধান্য দিয়েছি। তাছাড়া মুহম্মদ সারাবিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় নামও বটে। অতঃপর পরিতাপের সমুদ্রে হাবুডুবু খেয়ে বলতে হচ্ছে, নামের শেষে মুহম্মদ যুক্ত করে আমি এক বিরাট এবং অমার্জনীয় অপরাধ করে ফেলেছি। চরম অপ্রিয় সত্য বেশ কিছু পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক নামের শেষে মুহম্মদ থাকায় আমার লেখা প্রকাশ না করে এড়িয়ে যান। নিতান্ত আপন অথবা উদার নৈতিক মনোবৃত্তির কারণে দুই-একজন যখন আমাকে রিকোয়েস্ট করে বলেন, ভাই আপনার লেখা তো খুব ভালো। তবে নামের শেষে মুহম্মদ দিয়েছেন কেন? এটা বাদ দিয়ে দেন ভাই। অন্যভাবে নিবেন না আপনার মঙ্গলের জন্যই আমার বলা। এই যখন অবস্থা তখন কি আমার কিছু বুঝতে বাকি থাকে? এই দেশে এখনও মুহম্মদ নামের প্রতি অনেকের এলার্জি আছে আমার জানা ছিল না! আরও ভয়ংকর ব্যাপার হলো, একটি পত্রিকায় আমি লেখা পাঠিয়েছি। লেখাটি প্রকাশিতও হয়েছে। কিন্তু লেখকের নাম দেওয়া হয়েছে জসীম উদ্দীন। মুহম্মদ বাদ! সম্মানিত সাহিত্য সম্পাদক কি একজন লেখকের নাম কাটাছেঁড়া করার অধিকার রাখেন? বিষয়টি আমার ভালো জানা নেই। আমি যতটা জানি, সম্পাদক লেখায় প্রয়োজনীয় ঘষামাজা করতে পারেন। তিনি সেই অধিকার পদাধিকার বলে সংরক্ষণ করেন। তিনি ইচ্ছে করলেই আমার লেখাটি না ছাপাতে পারতেন। আর না ছাপালে আমারও এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ বা অনুযোগ দায়ের করার ন্যূনতম হকও থাকত না। কারণ লেখা ওনার পছন্দ নাও হতে পারে। কিন্তু নামের অংশ বিশেষ যখন অনুমতি ব্যতিরেকে কাটছাঁট করা হলো; তখন আমার বুকের ভেতর চিনচিন করে বৈকি!
আচ্ছা, এতক্ষণ যা বললাম অর্থাৎ আমার সাথে যা যা করা হলো তা কি ডান-বামের কারণে? নাকি এর জন্য কিছু সাহিত্য সম্পাদকের অনুদার এবং সংকীর্ণ মানসিকতা বা দৃষ্টিভঙ্গি দায়ী? আমি মনে করি, এর যে কোনোটাই হতে পারে? তবে আমি সবিনয়ে জানতে চাই, সাহিত্যের মতো নির্মল জায়গাটিতে যখন ডান-বামের চর্চা হয়; তখন কি তা সাহিত্য থাকে? নাকি সাহিত্যও রাজনীতির মাঠ হয়ে দাঁড়ায়? রাজনীতিতে যেমন হানাহানি, বিদ্বেষ, মতবিরোধ ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে জনমনের অস্থিরতা থেকে গোটা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হয়; সাহিত্যে হয়তো ততটা হয় না। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে সাহিত্যে ডানপন্থী-বামপন্থী বিভাজন জাতির জন্য কখনও সুফল বয়ে আনবে না। বরং একটা সময় দেশের সুশীল সমাজের মধ্যে বিভাজনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। যা কোনো সভ্য জাতির জন্য কাম্য নয়। কাম্য হতে পারে না। সাহিত্যকে বলা হয় সমাজ, জাতি বা সভ্যতার দর্পণ। এই স্বচ্ছ কাচের ন্যায় সাহিত্য নামের আয়নায় চোখ রাখলে যদি ডান-বাম নামের কুৎসিত মুখচ্ছবির বিদঘুটে হাসি দেখা যায়; তখন সেখানে সাহিত্য চর্চার নামে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক কিছু কবি এবং লেখকের স্বৈরাচারী আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে মাত্র। তাতে করে সাহিত্য সমাজ অহেতুক ও অনাকাক্সিক্ষতভাবে অনেক বৈরিতার মুখোমুখি হয় এবং ভবিষ্যতেও হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডানপন্থীদের দ্বারা বামপন্থীরা অবহেলিত হবে, নিপীড়িত হবে, প্রাপ্য অধিকার থেকে যেমন বঞ্চিত হবে; অনুরুপভাবে বামপন্থীদের দ্বারাও ডানপন্থীরা তদ্রুপ বৈষম্যপূর্ণ আচরণের শিকার হবে এবং হচ্ছে। আর এর পরিণাম একজন কবি এবং সাহিত্যিকের সাথে অন্য আরেকজন কবি এবং সাহিত্যিকের বিভেদ এবং বৈরিতার মুখোমুখি হওয়া ছাড়া অন্য কিছু নয়। সাহিত্যের মতোন সুনির্মল এবং পরিচ্ছন্ন প্লাটফরমে এটা চরম অনাকাক্সিক্ষত। বিষয়টা অনেকটা এমন যে, আমি ঢাকা যাব বলে লক্ষ্য স্থির করেছি। কিন্তু আমাকে বলা হলো, আপনি এই রাস্তায় যেতে পারবেন না। অন্য কোনো রাস্তা দিয়ে আপনাকে যেতে হবে। বাস্তবিক পক্ষে এমনটা কি মেনে নেওয়া সম্ভব? সোজা উত্তর সম্ভব নয়। কিন্তু আমি মেনে নিচ্ছি অথবা আমাকে মেনে নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যথায় আমার ঢাকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে অর্থাৎ লেখালেখির জগৎ থেকে বিদায় নিতে হবে। রাজনীতির মাঠ হলে এইরকম পরিস্থিতি মেনে নেওয়া যেত; কিন্তু সাহিত্যে যখন এমনটা ঘটে তখন তা মেনে নেওয়া অত্যন্ত পীড়াদায়ক বটে।
বাংলা সাহিত্যে ডান-বামের এই যে অস্তিত্ব তার প্রভাব এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রতিপত্তি অসংখ্য কারণে আমাদের সাহিত্য সমাজে বিরূপ অবস্থার সৃষ্টি করেছে এবং করবে। তৈরি হবে চরম মতদ্বৈধতা ও গভীর সংকট। যার মধ্যে অন্যতম একটি হলো লেখকের স্বাধীনতা এবং মন, মানস ও চিন্তনে অযাচিত হস্তক্ষেপ। এই বিভেদের কারণে একজন কবি এবং লেখক স্পষ্টত পরাধীন হবেন। নিজস্ব চিন্তা, চেতনার বহিঃপ্রকাশ না ঘটাতে পেরে তার সামগ্রিক সত্তার ওপর যে মারাত্মক প্রভাব পড়বে; তা তার সাহিত্য জীবনকে খুন করার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। মূলত একজন কবি কিংবা লেখক তার লেখার মাধ্যমে নিজস্ব চিন্তা, চেতনা এবং দর্শন পাঠকের চিত্তে এবং বিত্তে ছড়িয়ে দেন। ফলশ্রুতিতে তার কিছু ভক্ত এবং অনুরাগী জন্ম নেয়। যারা তাকে মৃত্যুর পরেও যুগ থেকে যুগান্তর বাঁচিয়ে রাখেন। এজন্য বলা হয়ে থাকে লেখকেরা মরেও পাঠকের মাঝে অনন্তকাল বেঁচে থাকেন। কিন্তু লেখকের মতো পাঠকও যদি ডানপন্থী কিংবা বামপন্থী হয়; তাহলে আমরা যারা মধ্য এবং উদারপন্থী আছি; আমাদের অবস্থা কী হবে? সম্মানিত পাঠক যদি এই বিভাজনের রকমফেরে পড়ে বই হাতে নেওয়ার আগেই লেখককে ডানপন্থী কিংবা বামপন্থী লেখক বা কবি মনে করে কুত্তার বাচ্চা বলে গালমন্দ করেন; তখন এই গালাগালির দায় কে নিবেন? আজকে যারা সাহিত্যে ডানপন্থী এবং বামপন্থী বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনীতিবিদের স্টাইলে ফায়দা লুটছেন, তারা কি এর দায় নিবেন? আমার ধারণা, কেউ এর দায় নিবেন না। তখন সবাই সচেতনে অথবা অবচেতনে এড়িয়ে যাবেন অথবা রাজনীতিবিদদের মতন প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে লাঠালাঠি শুরু করে দিবেন।
বাংলা সাহিত্যের অতীত এবং বর্তমান ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অনেক বড় বড় কবি এবং লেখককেও এই ডান-বামের তকমা গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র এই আজগুবি কারণে অনেকেই একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পদক, এমনকি স্বাধীনতা পদকসহ অন্যান্য অনেক পুরস্কার থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন। যতদূর জানি, তাদের কেউ কেউ গা থেকে এই ডান-বামের গন্ধ দূর করার জন্য চেষ্টা তদবির করেও কূলকিনারা করতে পারেননি। অনেকে আবার নিজের নাম পরিবর্তন করে ছদ্মনাম ধারণ করে লিখেছেন কিংবা লিখছেন। আবার কেউ কেউ ছদ্মনামের সাথে মুসলিম, হিন্দু কিংবা অন্যধর্মীয় নামের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন; যাতে করে পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক কিংবা কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হন। আবার অনেকে এমনও আছেন যে কাকের মতন চোখ বন্ধ রেখে নীরবে-নিভৃতে কোনোরকমে দিনাতিপাত করছেন। তারা ডান-বাম নামের এই সাহিত্য বাণিজ্যের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে বলতে হচ্ছে বাংলা সাহিত্যের দুই মহানায়ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলাম নিজেরাও এই ডান-বাম নামের বৈষম্যের শিকার। আজও দুই বাংলায় এমন অনেক সংকীর্ণ মানুষ আছেন যারা তাদেরও সাম্প্রদায়িকতার অন্ধকুপে বন্দি করে রেখেছেন এবং সাম্প্রদায়িকতার দেয়াল তুলে তাদের নিয়ে বিষোদগার করে যাচ্ছেন। রবীন্দ্র এবং নজরুল পরবর্তী আরও অনেক বড় বড় কবি সাহিত্যিক আছেন, যারা এই ডান-বামের শিকার হয়ে আজীবন বঞ্চিত থেকে গেছেন। আর এই বঞ্চনার মাত্রা এতটা তীব্র এবং ভয়ংকর যে, মৃত্যুর পরেও এই ডান-বাম তাদের পিছু ছাড়েননি। কাউকে কাউকে তো আবার প্রত্যাশিত কবর স্থানে দাফনও করতে দেওয়া হয়নি। ভাবা যায়! কী ভয়ানক ঘৃণ্য বর্বরোচিত সংকীর্ণ মানসিকত!
আমার বক্তব্য খুবই স্পষ্ট, সাহিত্যে রাজনীতি টেনে এনে ডানপন্থী এবং বামপন্থী কবি লেখক তকমা দিয়ে যারা ফায়দা লুটছেন; তারা কি তথাকথিত চরমপন্থী নয়? তারা কি সাহিত্যে চেতনা বিক্রি করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করছেন না? এখানেই শেষ নয়, সাদাসিধা, নিরীহ কবি এবং লেখকদের অপমান, অপদস্থ করে তারা পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করছেন! নিজ হাতে কৃত্রিম শ্রেণিভেদ ও সিন্ডিকেট তৈরি করে তারা দিনের পর দিন অন্যদের হাসি-তামাশার পাত্র বানিয়ে মজা নিচ্ছেন! এই তারাই আবার নিজেদের সাহিত্য রাজ্যের স্বঘোষিত সম্রাট মনে করে রাজস্ব চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান বৈষম্যহীন বাংলাদেশেও এদের দৌরাত্ম্য কিছুমাত্র কমেনি। এখনও তারা অনেক নিরীহ কবি ও লেখকদের নানাভাবে হুমকি ধামকি এবং হয়রানি করে যাচ্ছেন; যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত। এসব কিছুর ফলশ্রুতিতে যে সংকট তৈরি হচ্ছে তা আরও ভয়াবহ। অনেক কবি ও লেখক নিজেদের আত্মসম্মান বাঁচানোর জন্য লেখালেখির জগৎ থেকে নীরবে বিদায় নিচ্ছেন। অপমান ও অপদস্ত হওয়ার ভয়ে এবং আতংকে কেউ কেউ আবার মানসিক ট্রমায় ভুগছেন। এই আমার কথাই ধরা যাক কেন, আমার কাছে সেই ফোন আসার পর থেকে আমি অনেকদিন নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাতে পারিনি। তথাকথিত সেই সাহিত্য সম্পাদকের বিঘাইড়া হাসির কথা মনে হলে আমার এখনও পিলে চমকে যাওয়ার যোগাড় হয়। তার শ্রীহীন কথা-বার্তা আমার কানে এখনো বিষ পাথরের মতন বিদ্ধ হয়। সেই ঘটনার পর থেকে প্রায় দুই বছর হতে চলল; অথচ আজও আমি তা ভুলতে পারিনি। এতে হয়তো বাংলা সাহিত্যে ডান-বাম পরিস্থিতির মারাত্মক প্রভাব কিছুটা হলেও অনুমেয়।
এই লেখাটির কি এখানেই ইতি হবে? অথচ আমার ভেতরে এখনো একটি জগদ্দল পাথর হাঁটু গেড়ে বসে আছে। ঠেলাধাক্কা দিয়েও তাকে স্থানচ্যুত করতে পারছি না। আচ্ছা, বাংলা সাহিত্যে ডান, বামের অস্তিত্ব এবং সংকট সম্পর্কে আমরা সবাই কি কম-বেশি জানি না? আমার ধারণা, সবাই কম-বেশি জানি। তবুও আমরা অনেকেই এই বিভেদের এবং বিদ্বেষের অবসান চাই না। বরং একে জিইয়ে রেখে আমাদের কেউ কেউ ব্যক্তি, গোষ্ঠী অথবা দলগত স্বার্থ হাসিল করতে চায়। অর্থাৎ ডান-বাম শব্দদ্বয়কে বাংলা সাহিত্যে একটি হাতিয়ার বা মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। যা কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তবুও আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে। যদিও সবাই আমরা জানি, এই বৈষম্যের পরিণতি কারো জন্যই কল্যাণ বয়ে আনবে না..!
সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ থেকে

শেয়ার Facebook

আরও যেসব নিউজ পড়তে পারেন

যেন তার সঙ্গে কখনো দেখাই হয়নি :: কাজী জহিরুল ইসলাম

July 5, 2025

জ্ঞান : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

July 3, 2025

সাম্প্রতিক খবর

  • বাংলা সাহিত্যে ডান-বামের অস্তিত্ব ও সংকট :: জসীম উদ্দীন মুহম্মদ

    July 5, 2025
  • অদম্য কলাগাছ :: গাজী তানভীর আহমদ

    July 5, 2025
  • রত্নদ্বীপের খোঁজে :: প্রিন্স আশরাফ

    July 5, 2025
  • জগলুল হায়দার এর ছড়া :: দেশপ্রেমী সব লাল ছিলো

    July 5, 2025
  • ফুলে কাঁটা :: বিশ্বজিৎ দাস

    July 5, 2025

BDOUTLOOK.COM

নির্বাহী সম্পাদক : কাদের বাবু

  • হোম
  • দেশ
  • বিশ্ব
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • শিল্পসাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • প্রবন্ধ-আলোচনা
    • সাহিত্যের খবর

bdoutlooknews@gmail.com

  • Privacy Policy
BDOUTLOOK
  • হোম
  • দেশ
  • বিশ্ব
  • রাজনীতি
  • অর্থবাণিজ্য
  • খেলা
  • বিনোদন
  • মতামত
  • শিল্পসাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • প্রবন্ধ-আলোচনা
    • সাহিত্যের খবর