রয়টার্স বেইজিং
কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার দুটি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালির স্পর্শকাতর জলসীমা অতিক্রমের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। গত শনিবার দেশটির সামরিক বাহিনী বলছে, তারা এ ঘটনাকে ‘সমস্যা সৃষ্টির চেষ্টা ও উসকানি’ হিসেবে দেখছে।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড জানায়, কানাডার যুদ্ধজাহাজ ভিল দ্য কুবেক এবং অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রিত-ক্ষেপণাস্ত্র (গাইডেড-মিসাইল) ধ্বংসকারী যুদ্ধজাহাজ ব্রিসবেন তাইওয়ান প্রণালি অতিক্রম করেছে। এ সময় চীনের সেনারা যুদ্ধজাহাজ দুটিকে অনুসরণ ও সতর্ক করেছে।
পিএলএর ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভুল বার্তা দিচ্ছে এবং নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র রোববার জানান, রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান নেভির এইচএমএএস ব্রিসবেন ৬ থেকে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাইওয়ান প্রণালি পাড়ি দিয়েছে। নিয়মিত নৌ চলাচলের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইন মেনেই তা করা হয়েছে।
মুখপাত্র আরও জানান, কানাডার যুদ্ধজাহাজ এইচএমসিএস ভিল দ্য কুবেকও একই সময় ওই প্রণালি অতিক্রম করেছে। অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী আন্তর্জাতিক জলপথে চলাচলের স্বাধীনতা অব্যাহত রাখবে এবং জাতিসংঘের সমুদ্র আইন কনভেনশন মেনে চলবে।
কানাডার সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘বর্তমানে তাইওয়ান প্রণালিতে থাকা আমাদের জাহাজগুলোর যাত্রাপথ নিয়ে মন্তব্য করব না।’ তবে তিনি বলেন, ভিল দ্য কুবেক বর্তমানে অপারেশন হরাইজনে অংশ নিচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা জোরদার করাই এই অপারেশনের উদ্দেশ্য।
কানাডার সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাহাজটি চলতি সপ্তাহের শুরুতে ফিলিপাইনের অর্থনৈতিক অঞ্চলে নৌ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল।
এদিকে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, প্রণালির পরিস্থিতি তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উপযুক্ত নৌ ও বিমানবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী প্রতি মাসে অন্তত একবার তাইওয়ান প্রণালি দিয়ে জাহাজ পরিচালনা করে। তাদের সঙ্গে মাঝে মাঝে কানাডা, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের যুদ্ধজাহাজও থাকে। এসব দেশ ও তাইওয়ান প্রণালিটিকে আন্তর্জাতিক জলপথ বলে মনে করে।
কিন্তু চীনের দাবি, তাইওয়ান প্রণালি তার আঞ্চলিক জলসীমার অন্তর্ভুক্ত। স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ান বেইজিংয়ের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে।
গত পাঁচ বছরে তাইওয়ানের ওপর সামরিক চাপ বাড়িয়েছে চীন। চাপের অংশ হিসেবে তাইওয়ানের কাছাকাছি অঞ্চলে প্রণালিটিতে নিয়মিত যুদ্ধ মহড়া চালাচ্ছে বেইজিং।