এক নারী চিকিৎসকের হিজাব খুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্কে জড়িয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ঘটনাটি ঘটে সোমবার, যখন বিহার সচিবালয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি নবনিযুক্ত আয়ুষ চিকিৎসকদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে এক মুসলিম নারী চিকিৎসক হিজাব পরিহিত অবস্থায় নিয়োগপত্র নিতে গেলে মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ তার হিজাব টেনে নামিয়ে দেন। পুরো ঘটনাটি ভিডিওতে ধরা পড়ে এবং তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, নিয়োগপত্র দেওয়ার সময় নীতীশ কুমার ওই চিকিৎসকের দিকে ঝুঁকে পড়ে প্রশ্ন করেন, “এটা কী?”—এরপর তিনি তার হিজাব সরিয়ে দেন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী, মুখ্যসচিব দীপক কুমারসহ একাধিক মন্ত্রী ও কর্মকর্তা। কেউ কেউ মুখ্যমন্ত্রীকে থামানোর চেষ্টা করলেও কয়েকজনকে হাসতেও দেখা যায়, যা বিতর্ককে আরও উসকে দেয়।
ঘটনার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। এআইএমআইএম, কংগ্রেস ও আরজেডি ঘটনাটিকে নারীর সম্মান ও ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে আখ্যা দিয়েছে। তারা নীতীশ কুমারের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া এবং কেউ কেউ পদত্যাগের দাবিও তুলেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ব্যক্তিগত ধর্মীয় পোশাকে জোরপূর্বক হস্তক্ষেপ সংবিধানবিরোধী।
অন্যদিকে, নীতীশ কুমারের দল জনতা দল (ইউনাইটেড) এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। দলের নেতারা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী ওই নারী চিকিৎসকের প্রতি স্নেহ থেকেই এমন আচরণ করেছেন এবং বিরোধীরা ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টিকে রাজনৈতিক রঙ দিচ্ছে।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া ভারতের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। পাকিস্তানের কয়েকজন বিশ্লেষক ও সাংবাদিক সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটির সমালোচনা করে একে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সব মিলিয়ে, নারী অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক শালীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই ঘটনা।