আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাজ্যের ২২০ জনের বেশি সংসদ সদস্য—যাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির অনেক এমপিও রয়েছেন—প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। এতে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে স্টারমার সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ আরও বাড়ছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে জানায়, নয়টি রাজনৈতিক দলের এমপিদের স্বাক্ষরিত একটি যৌথ চিঠিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিন।”
জাতিসংঘের এই সম্মেলনটি আগামী ২৮ ও ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে, যার সহ-সভাপতিত্ব করবে ফ্রান্স ও সৌদি আরব।
চিঠিতে আরও বলা হয়, “আমরা জানি, শুধু যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি পেলেই ফিলিস্তিন একটি পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে উঠবে না। তবে এই স্বীকৃতি বিশ্বকে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে—বিলম্বিত ন্যায়বিচার আর চলতে পারে না।”
এমপিরা যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তারা বলেন, “১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণা’র মাধ্যমে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাজ্য ভূমিকা রেখেছিল; এখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে সমানভাবে নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে।”
চিঠিতে কনজারভেটিভ পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি), প্লাইড কামরিস (ওয়েলস) ও গ্রিন পার্টির প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর রয়েছে। ফলে এটি একটি পার্লামেন্টারি ঐকমত্যের ইঙ্গিত দেয়, যা যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রনীতিতে দৃশ্যমান প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।
এখনো পর্যন্ত স্টারমার সরকার এ প্রস্তাবের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভেতর ক্রমবর্ধমান চাপ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিন প্রশ্নে যুক্তরাজ্যের অবস্থান পুনর্মূল্যায়নের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এই আহ্বান এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজায় চলমান মানবিক সংকট, যুদ্ধবিরতির অনিশ্চয়তা এবং দীর্ঘদিনের দখলদারিত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ চরমে উঠেছে। যুক্তরাজ্য যদি এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তবে তা বিশ্বরাজনীতিতে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।