চলচ্চিত্রে তাঁর প্রথম পদচারণা। মডেল ও অভিনেত্রী তাশদিক নমিরা আহমেদের অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘আলী’ গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে। বিপ্লব হায়দার পরিচালিত এ সিনেমায় তিনি একজন মানবাধিকারকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সিনেমা মুক্তির আনন্দের মাঝেই দেশে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা তাঁকে করে তুলেছে বিষণ্ন। কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
কেমন আছেন এই মুহূর্তে?
খুব একটা ভালো নেই। চারপাশে এক গভীর শোকের আবহ। মনটা ভার হয়ে আছে। বিমান দুর্ঘটনায় নিষ্পাপ শিশুদের প্রাণ হারানোর খবর আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। একজন মা হিসেবে সেই মুহূর্তগুলো কল্পনাই করতে পারি না। যখন আগুনে পুড়ছিল তারা, নিশ্চয়ই মা–বাবাকে ডাকছিল। ভাবলেই চোখ ভিজে আসে। এমন একটা দুঃসময়ে আমার প্রথম সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এটা তো আনন্দের সময় হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেই আনন্দও যেন বিমর্ষ হয়ে গেছে।

তবে মুক্তির দিন হলে হলে দর্শকদের সাড়া কেমন পেয়েছেন?
প্রথম দিনই গিয়েছিলাম স্টার সিনেপ্লেক্স ও সনি স্কয়ারে। নিজেকে বড় পর্দায় দেখা—এ এক অনন্য অভিজ্ঞতা। দর্শকদের সরাসরি প্রতিক্রিয়া পাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। অনেকেই সিনেমাটি দেখে আবেগে কেঁদেছেন। কেউ কেউ বলেছে, ‘আপনি যেন এমন গল্পেই বারবার কাজ করেন।’ আমার চরিত্রের প্রশংসাও করেছেন অনেকে। এই ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
‘আলী’ সিনেমায় আপনাকে একজন মানবাধিকারকর্মীর ভূমিকায় দেখা গেছে। চরিত্রটি কেমন চ্যালেঞ্জিং ছিল?
জেরিন চরিত্রটি করার আগে দীর্ঘ প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পাইনি। নির্মাতা যখন গল্পটি ফোনে শোনান, তখনই বুঝতে পারি—এখানে আমার অভিনয়ের জায়গা আছে। প্রেমকেন্দ্রিক নয়, বরং ভাইবোনের সম্পর্কের এক আবেগঘন গল্প তুলে ধরা হয়েছে এখানে। জেরিন চরিত্রটা যতটা না কঠিন ছিল, তার চেয়েও বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল সহশিল্পী শতাব্দী ওয়াদুদের সঙ্গে কাজ করা। তিনি একজন অভিজ্ঞ মঞ্চ ও টিভি অভিনেতা। তাঁর সঙ্গে প্রতিটি দৃশ্য খুব মনোযোগ দিয়ে করতে হয়েছে। তবে নির্মাতা গল্পটা এত ভালোভাবে সাজিয়েছেন যে পুরো কাজটাই শেষ পর্যন্ত সহজ হয়ে গেছে।

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে শোবিজে। এতদিন সিনেমা থেকে দূরে থাকার কারণ কী?
২০১২ সালে আমি একটি রিয়েলিটি শো থেকে মিডিয়ায় আসি। তখন সিনেমার পরিবেশ খুব একটা ভালো ছিল না। অনেক প্রস্তাব পেলেও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারিনি। নাটক, মডেলিং ও নাচেই বেশি ব্যস্ত ছিলাম। একটা সময় ব্যক্তিগত কারণেও অভিনয় থেকে বিরতি নিতে হয়। পরে যখন দেখি, চলচ্চিত্রে ভালো ভালো গল্প ও নির্মাণ আসছে, তখন আবার আগ্রহ জন্মে। শাকিব খান, সিয়াম, শুভদের সিনেমাগুলো দর্শক গ্রহণ করছে দেখে উৎসাহ পাই।
তাহলে সিনেমায় নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা আছে?
অবশ্যই। ভালো গল্প ও চরিত্র পেলে নিয়মিত কাজ করতে চাই। আমি অপেক্ষায় আছি এমন কাজের জন্য, যেখানে সত্যিই কিছু দেওয়ার আছে।
গ্ল্যামার চরিত্রের বাইরেও কি কাজ করতে আগ্রহী?
অভিনয়ে গ্ল্যামার গুরুত্বপূর্ণ—এটা ঠিক। তবে সবসময় গ্ল্যামার চরিত্র নয়, অভিনয়ের তৃষ্ণা মেটাতে চাই ভিন্নধর্মী, চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে কাজ করে। দুটিতেই নিজেকে খুঁজে পাই।