গাজার বিভিন্ন এলাকায় একযোগে চালানো ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত দুজন ছিলেন ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ মানুষ। একাধিক পৃথক হামলায় এই প্রাণহানি ঘটে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ না হলে পুরো একটি প্রজন্ম চরম বিপদের মুখে পড়বে।
আলজাজিরা জানায়, মঙ্গলবার উত্তর গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩ জন নিহত হন এবং আরও বহু মানুষ আহত হন। চিকিৎসা সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফাহ অঞ্চলের উত্তরে, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে আরেকটি হামলায় দুজন নারী নিহত এবং প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ জানায়, মে মাসের শেষ দিকে ফাউন্ডেশনটি কাজ শুরু করার পর থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে কমপক্ষে ৮৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানায়, মঙ্গলবার ভোর থেকে তাদের উদ্ধারকারী দলগুলো গাজা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং বহু আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। নিহতদের অধিকাংশই ইসরায়েলি বিমান হামলার শিকার হয়েছেন।
একটি তাঁবুতে বসবাসরত পরিবারদের ওপর চালানো আরেক হামলায় গাজা শহরেই ছয়জন নিহত হন। এছাড়া অন্যান্য এলাকায় আরও কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে, বড় পরিসরে নতুন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইতোমধ্যে উত্তর গাজার ১৬টি এলাকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব হুমকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত জাবালিয়া অন্যতম।
আলজাজিরার প্রতিবেদক মোয়াথ আল-কাহলৌত জানান, বাসিন্দারা গাড়ি বা গাধা ব্যবহার করে এলাকা ত্যাগ করছেন। কোথায় যাবেন, তা জানেন না—তবুও আতঙ্কে পালিয়ে যাচ্ছেন। জ্বালানির অভাবে পরিবহন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে, ফলে পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “এখানকার প্রতিটি মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”