আল–জাজিরা
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা সত্ত্বেও গাজায় বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গতকাল বুধবার ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে দাবি করেন, তাঁর প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে ইসরায়েল ও হামাস উভয়েই সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমি গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি—ইসরায়েল ও হামাস আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে।”
কিন্তু ট্রাম্পের এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গাজার পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা।
আল–জাজিরার স্থানীয় প্রতিবেদকদের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান আল–শাতি শরণার্থীশিবিরের একটি বাড়িতে বোমা ফেলে। এছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চলের সাবরা এলাকায় একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা
গত মাসে গাজা ইস্যুতে ট্রাম্প তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এতে হামাস ও ইসরায়েল উভয়পক্ষের মধ্যে সাময়িক সমঝোতা গড়ে ওঠে বলে জানা যায়।
হামাস জানায়, তারা বন্দী সকল ইসরায়েলিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত। বিনিময়ে ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানান।
তবে বাস্তবে সেই আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল আবারও আকাশপথে হামলা চালায়।
⚔️ দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাত
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ওই ঘটনায় ১,২১৯ জন নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি করা হয়।
এদের মধ্যে ৪৭ জন এখনো গাজায় রয়েছেন এবং ২৫ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
হামলার প্রতিশোধে সেই দিন থেকেই গাজায় অব্যাহত নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯ জন শিশু।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা, শান্তি আলোচনার আশ্বাস, কিংবা আন্তর্জাতিক চাপ—কিছুই যেন গাজার আকাশ থেকে মৃত্যু থামাতে পারছে না।
একই মাটিতে আজও শিশুরা ঘুমায় ভয়ে, মায়েরা কাঁদে হারানো সন্তানদের জন্য, আর বিশ্ব তাকিয়ে থাকে নীরবে—এক অন্তহীন যুদ্ধের দিকে।