নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, সেটি স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ফলে আসন্ন নির্বাচনে কোনো আইনি বাধা থাকছে না।
আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এই আদেশ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, “চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন। ফলে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের আর কোনো বাধা নেই।”
এর আগে দুপুরে হাইকোর্ট ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা স্থগিত করেছিলেন। বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে রুলসহ সেই আদেশ দেন।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ পৃথক প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো দিয়েছে দুটি প্যানেল। পূর্ণাঙ্গ ও আংশিক মিলিয়ে প্রায় ১০টি প্যানেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
ডাকসুর ২৮টি পদে মোট প্রার্থী ৪৭১ জন, এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। কেবল সদস্য পদেই লড়ছেন ২১৭ জন প্রার্থী। পাশাপাশি ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
ঢাবিতে ক্ষোভ থেকে উচ্ছ্বাস
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের খবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। সেখানে হাজারো শিক্ষার্থী স্লোগান দেন— “হাইকোর্ট না ডাকসু, ডাকসু ডাকসু”, “ডাকসু আমার অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার।”
তবে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে চেম্বার আদালতের নতুন আদেশের খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মাঝে উচ্ছ্বাস দেখা দেয়। তাঁরা বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে চিৎকার করেন— “ডাকসু ডাকসু”, “৯ তারিখ ৯ তারিখ।” পরে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনেকে সরে যেতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ–সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের। পরে যোগ দেন একই প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদারও।