বিশেষ প্রতিবেদক
যাঁরা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। টিআইএনধারী হয়েও রিটার্ন না দিলে প্রথমে নোটিশ পাঠানো হবে। প্রয়োজনে তাঁদের আয়, ব্যয় ও সম্পদের সরেজমিন তদন্ত চালানো হবে এবং আইন অনুযায়ী কর আদায় করা হবে।
এ তথ্য জানানো হয়েছে এনবিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত রাজস্ব সভার সিদ্ধান্তের পর শুক্রবার এ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতি মাসের রাজস্ব সভায় এসব কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে হবে। কর ফাঁকি রোধ ও রাজস্ব আয় বাড়াতে প্রতিটি কর অঞ্চলকে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে দেশে টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ। এর মধ্যে প্রতিবছর মাত্র ৪০–৪২ লাখ ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন দেন।
কারা রিটার্ন জমা দিতে বাধ্য?
সবার জন্য রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে বার্ষিক আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হলে অবশ্যই রিটার্ন জমা দিতে হয়। এছাড়া আরও ৪৫ ধরনের করদাতার জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
- পূর্ববর্তী তিন বছরে কখনো করযোগ্য আয় থাকলে
- ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণ করলে
- কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পনসর শেয়ারহোল্ডার হলে
- ব্যবসায়ী, অংশীদার বা বেতনভোগী নির্বাহী হিসেবে কাজ করলে
- সরকারি চাকরিজীবী (নির্দিষ্ট পদমর্যাদা থেকে) হলে
- আমদানি–রপ্তানি সনদ বা ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য
- চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, স্থপতি প্রভৃতি পেশাজীবীদের নিবন্ধন নবায়নের ক্ষেত্রে
- সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তরের সময়
- ড্রাগ, ফায়ার, পরিবেশ ছাড়পত্র বা অন্যান্য লাইসেন্স নবায়নের সময়
- যানবাহন, নৌযান, গ্যাস বা বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে
- নির্বাচন, ট্রেড বডি বা ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণে
- উচ্চমূল্যের ব্যাংক আমানত বা সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগে
- হোটেল, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, ক্লিনিক, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদির লাইসেন্স গ্রহণে
এছাড়া ই-কমার্স, এনজিও, নির্মাণ অনুমোদন, ভাড়ায় সম্পত্তি প্রদান বা সেবা সরবরাহের মতো ক্ষেত্রেও রিটার্ন বাধ্যতামূলক।