বিশেষ প্রতিবেদক
রাজধানী ঢাকায় আজ রোববার (৩ আগস্ট) নেমে এসেছে যানজটের ভয়াবহতা। দিনের শুরু থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ধীরগতির যান চলাচল ও তীব্র জট তৈরি হয়। রাজনৈতিক সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চলমান এইচএসসি পরীক্ষা এবং কর্মদিবস—সবকিছুর একসাথে আগমনে নাকাল হয়ে পড়েছে নগরবাসী।
দুপুর আড়াইটায় শাহবাগে শুরু হয় ছাত্রদলের ‘ছাত্র সমাবেশ’, যা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে। একইসঙ্গে শহীদ মিনারে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের’ দাবিতে এনসিপির জনসমাবেশ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর ‘জুলাই জাগরণ’ অনুষ্ঠান ঘিরে রাজধানীর কেন্দ্রস্থল একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) আগেই আশঙ্কা করেছিল শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যানজট সৃষ্টি হতে পারে। বাস্তবে সেটি আরও বিস্তৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে ফার্মগেট, বাংলামটর, কাওরান বাজার, মিরপুর রোড, সায়েন্স ল্যাব, গুলিস্তান, প্রেস ক্লাব, মৎস্য ভবনসহ বিভিন্ন এলাকায়।
জনসাধারণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায় গণপরিবহণ সংকটে। বাসের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও অনেকে উঠতে পারেননি, অনেকে বাধ্য হয়েছেন হেঁটেই গন্তব্যে রওনা হতে।
চাকরিজীবী চমং উ মারমা বলেন, “দুপুরে অফিস ছিল। প্রতিদিন যেভাবে বের হই, আজও সেভাবেই বের হয়েছিলাম। কিন্তু বাস পাচ্ছিলাম না। বৃষ্টিও ছিল। অনেক কষ্ট করে অফিসে পৌঁছেছি।”
আসাদগেটে বাসের অপেক্ষায় থাকা বাদল মিয়া বলেন, “কয়েকটা বাস সামনে দিয়ে গেল, কিন্তু ভেতরে ওঠার মতো অবস্থা নেই। গুলিস্তান যেতে হবে—না পেলে হেঁটেই যাবো।”
সড়কের জটিলতা মেট্রোরেলেও চাপ বাড়িয়ে দেয়। পল্লবী, মিরপুর, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ফার্মগেট স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রী আসিফ আলী বলেন, “জ্যাম দেখে মেট্রো ধরতে এসেছি। কিন্তু এখানেও লম্বা লাইন। মনে হচ্ছে, কোনো পথই আজ সহজ নয়।”
সব মিলিয়ে রাজধানীজুড়ে দেখা গেছে এক বিষণ্ন চিত্র—বেহাল নগর, বিপাকে মানুষ।