নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন, তারা কোনো নির্বাচনী পদ্ধতির পক্ষে বা বিপক্ষে নয়, বরং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে জীবন দিয়েছিলেন। তাই গণতন্ত্রের একমাত্র পথ হলো অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন—তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে (আইইবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত শহীদ পরিবার সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, “আজকাল অনেকে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি নিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি করছেন। কিন্তু সাধারণ জনগণ চায়—এলাকার পরিচিত মানুষই হোক তাঁদের সংসদ সদস্য। পিআর পদ্ধতিতে দেখা যাবে, কুড়িগ্রামের লোক গিয়ে ভোলার এমপি হচ্ছেন! জনগণ তাকে চিনবে কী করে? মার্কা দিয়ে চিনতে বললে সেটা গণতন্ত্র নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আজ এক শহীদ পিতা বলেছেন, শহীদদের স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি। এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। বর্তমান সরকার ও তাদের উপদেষ্টারা কেউই জুলাই চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে না। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে তারা একটি কথাও বলেনি। শুধু অধ্যাপক আসিফ নজরুলই মাঝেমধ্যে কিছু বলেন।”
হাফিজ উদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, “স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে আমরা দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমে পরাজিত করেছি। কিন্তু আজ যারা আন্দোলনে ছিলেন না, তারাই এসে আন্দোলনের কৃতিত্ব দাবি করছেন। যেমন, মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার, এখন তা দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখে! আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই আত্মীয়-স্বজনকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে।”
বিএনপির এ নেতা বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে একদিকে বিএনপি, আরেকদিকে ৩৪টি দল। এখন প্রশ্ন হলো, জনসমর্থন কার কত? যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তারাই এখন ভুল স্বীকার করছে—কিন্তু এই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ তারা পাচ্ছে কীভাবে?”
মেজর হাফিজ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশের সাহসী তরুণ সমাজ বিশ্বের অন্য কোথাও নেই। এই তরুণরাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এগিয়ে আসবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন তালুকদার। বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুস সোহবান, এ্যাবের সাবেক মহাসচিব আলমগীর হাসিন আহমেদ, আইইবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান, এবং প্রকৌশলী লোকমান প্রমুখ।