শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মুখে কলেজ পরিদর্শনে আসা অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দিয়াবাড়ি মোড়ে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়লে তাঁদের গাড়ি ঘুরিয়ে পুনরায় কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
দুর্ঘটনাস্থল মাইলস্টোন কলেজের সামনের রাস্তায় ও আশপাশে শত শত শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা উপদেষ্টাদের পদত্যাগ এবং শিক্ষকদের ওপর সেনাসদস্যদের ‘হামলার’ জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করছেন।
এর আগে দুপুর পৌনে একটার দিকে উপদেষ্টারা কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় একটি কনফারেন্স কক্ষে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। আমরা প্রতিটি দাবিই বাস্তবায়নে কাজ করব। বিশ্বাস রাখুন, আপনাদের পাশে আছি।”
তবে তাঁর আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি আশ্বস্ত না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। বিকেল সাড়ে তিনটার কিছু আগে উপদেষ্টারা কলেজ থেকে বের হয়ে দিয়াবাড়ি মোড়ে পৌঁছালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের ঘিরে ধরে বাধা দেন। পরে নিরাপত্তার কারণে তাঁরা আবার কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি পুরোনো প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত ও ১৬৫ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি
১. নিহতদের সঠিক নাম-পরিচয় প্রকাশ
২. আহতদের পূর্ণাঙ্গ ও নির্ভুল তালিকা প্রকাশ
৩. প্রতিটি পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ
৪. ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো বিমান বাতিল করে আধুনিক নিরাপদ বিমান চালু
৫. বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার ও মানবিকীকরণ
৬. শিক্ষকদের ওপর সেনা সদস্যদের হামলার ঘটনায় প্রকাশ্য নিঃশর্ত ক্ষমা
এ ঘটনায় রাজধানীজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, “আমরা শুধু কথা নয়, কাজ দেখতে চাই। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।”