ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত হলো ‘সপ্তম নেহরীন খান স্মৃতি বক্তৃতা’। বুধবার (১৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুর এলাহী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই আয়োজনে মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, অনুবাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. নিয়াজ জামান।
“লিটারেরি ট্রান্সলেশন অ্যান্ড ট্রান্সলেটরস: বাংলাদেশ অ্যান্ড বিয়ন্ড” শীর্ষক বক্তৃতায় অধ্যাপক জামান বলেন, “একসময় অনুবাদকরা সাহিত্যিক হিসেবে তেমন স্বীকৃতি পেতেন না। তবে ১৯৭০ সালের পর থেকে অনুবাদকে সৃজনশীল সাহিত্যকর্ম হিসেবে গণ্য করা শুরু হয়।” তিনি উল্লেখ করেন, ২০২০ সালে পেন আমেরিকার সম্মেলনে অনুবাদকদের ন্যায্য সম্মানী, কপিরাইট অধিকার এবং লেখকের সঙ্গে সমানভাবে নাম প্রকাশের দাবি একটি ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত হয়।
ড. জামান আরও বলেন, “বর্তমানে অনুবাদ সাহিত্যে অনুবাদকের ভূমিকা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বুকার পুরস্কারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতেও লেখক ও অনুবাদক উভয়কে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের অনূদিত গ্রন্থের অধিকাংশই স্থানীয় প্রকাশকদের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, ফলে তা আন্তর্জাতিক পাঠকের কাছে খুব একটা পৌঁছাতে পারে না।”
বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ, উন্নত মানের ই-বুক প্রকাশ, আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশগ্রহণ এবং বিদেশি জার্নালে অনূদিত লেখা প্রকাশের উপর জোর দেন তিনি।

সাংস্কৃতিক ভিন্নতা সত্ত্বেও অনুবাদের মাধ্যমে পাঠকের কাছে সাহিত্যিক অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব বলে মত দেন অধ্যাপক জামান। তাঁর ভাষায়, “সুনির্দিষ্ট কিছু শব্দ সাংস্কৃতিকভাবে ধরে রেখে অভিযোজনের মাধ্যমে তা পাঠকের নিকট অর্থবহ করে তোলা যায়।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, উপাচার্য ড. শামস রহমান,বিশিষ্ট অনুবাদক ও অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম,কোষাধ্যক্ষ এয়ার কমডোর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রয়াত নেহরীন খানের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।