জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনা জাতিকে “মুক্তিযোদ্ধা বনাম রাজাকার” বিভাজনের ফাঁদে ফেলে দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছিলেন। মুজিববাদী আদর্শ গত ৫০ বছর ধরে জাতিকে বিভক্ত রেখেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই বিভাজন অগ্রাহ্য করে নতুন এক অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও সর্বজনীন বাংলাদেশের পথ তৈরি হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভোলা প্রেস ক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, “২৪ সালের ১৪ জুলাই দিল্লির অনুগত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতিপুতি বলে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের প্রতিবাদে দেশের ছাত্রসমাজ, বিশেষ করে আমাদের বোনেরা রাতেই রাজপথে নেমে আসে। পরদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর বর্বর হামলা চালালেও তারা পিছিয়ে যায়নি, বরং শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শ্রমজীবী মানুষ এবং অভিভাবকেরাও এই প্রতিরোধে পাশে দাঁড়ায়। এই ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য হতে হয়।”
ভোলার অবহেলিত অবস্থার কথা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “যেখানে সারা দেশের গৃহস্থালির গ্যাস সরবরাহ হয় ভোলা থেকে, সেখানে ভোলার মানুষই গ্যাস সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এখানকার হাসপাতালগুলো অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। উন্নয়ন থেকে যুগের পর যুগ বঞ্চিত রাখা হয়েছে ভোলাবাসীকে। আজ থেকে সেই দূরত্ব শেষ—ভোলাবাসীকে আপন করে নিতে আমরা এসেছি।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, সদস্য হাসিব আর রহমান এবং শহীদ মো. হাসানের পিতা মো. মনির হোসেন।
পদযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, নাহিদা সারওয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহসহ দলের অন্যান্য নেতারা।
এর আগে দুপুরে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা ভোলা শহরের কালিবাড়ি মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি সদর রোড, কালিনাথ রায়ের বাজার ও ইলিশ ফোয়ারা হয়ে প্রেস ক্লাব চত্বরে এসে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে বক্তব্য দেন নেতারা ও স্থানীয় নাগরিকেরা।