উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে এবং পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষাসচিবের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানীর সচিবালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে এসে জড়ো হন। তাঁরা ‘ভুয়া ভুয়া’, ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’—এই স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে সচিবালয়ের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সামনের সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে।
“ভবিষ্যৎ নিয়ে কেউ খেলে না”
ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী জোনায়েদ আহমেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মাইলস্টোন কলেজে এত বড় দুর্ঘটনার পরও আমাদের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত হয়নি। অথচ রাত তিনটার দিকে হঠাৎ করে পরীক্ষা বাতিল করা হয়। আমরা সকালে রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার পর জানতে পারি পরীক্ষা হচ্ছে না। এরকম অবিবেচনাপূর্ণ সিদ্ধান্তের দায় শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবকে নিতে হবে। তাই আমরা এখানে এসেছি।”
বিক্ষোভে নতুন দাবি
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবিও তুলেছেন। তাঁদের দাবি, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক অসঙ্গতি রয়েছে এবং বহু শিক্ষার্থী অপ্রত্যাশিতভাবে ফেল করেছেন।
পুলিশি অবস্থান ও যানজট
সচিবালয়ের আশপাশের প্রতিটি গেটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভেতরে আটকা পড়েছে অনেক যানবাহন ও সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে মাঝরাতে
মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে আজকের (মঙ্গলবার) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তবে এ সিদ্ধান্তটি আসে সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে। প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম পরীক্ষার স্থগিতাদেশ জানান। পরে সকাল সোয়া সাতটার দিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি তা নিশ্চিত করে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন নিহত এবং ১৬৫ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীদের মতে, এমন ভয়াবহ ঘটনার পর দ্রুত, মানবিক ও কার্যকর সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় শিক্ষা প্রশাসনের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, “আমরা আর মুখে কথা শুনতে চাই না, পদক্ষেপ দেখতে চাই।”