“দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা” কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ শহরে এক পথসভা ও পদযাত্রার আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুরে শহরের কৃষি ব্যাংক চত্বরে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে দলের শীর্ষ নেতারা বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট তুলে ধরে একটি নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের ডাক দেন।
এদিন সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল সহকারে এনসিপির কর্মী-সমর্থকরা সভাস্থলে জড়ো হতে থাকেন। শহরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকেও সতর্ক অবস্থানে দেখা যায়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “মুন্সীগঞ্জ এক সময় ছিল উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। অথচ আজ এখানকার স্বাস্থ্যসেবা, যাতায়াত, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। আমরা সেই ঐতিহ্যের বিক্রমপুরকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে চাই। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সামনে বড় লড়াই আসছে, আমরা সেই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “গোপালগঞ্জে আমাদের কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে। সামনে আরও জেলায় হামলা হতে পারে। কিন্তু আমাদের দমন করা যাবে না। আমরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছি, তা শেষ না করে থামবো না।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে তিনি বলেন, “মুন্সীগঞ্জের অসংখ্য মানুষ প্রবাসে রয়েছেন। আমরা তাদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করছি। আপনাদের প্রবাসী স্বজনদের এই বিষয়ে সরব হতে বলুন।”
তিনি বক্তব্য শেষে বলেন, “আজ জুম্মার দিন। আমরা সবাই একত্রে নামাজ আদায় করবো, শহীদদের জন্য এবং দেশের কল্যাণের জন্য দোয়া করবো।”
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও সামান্তা শারমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
সারজিস আলম বলেন, “জুলাই গণহত্যা, বিডিআর ট্র্যাজেডি ও শাপলা চত্বরের ঘটনার জন্য দায়ী হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। দেশের বাইরে যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আগামী বাংলাদেশ নির্মাণে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দল, মত ও শ্রেণিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
পথসভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা একটি মিছিলসহ নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “জুলাই পদযাত্রা” চলবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, যতদিন না পর্যন্ত নতুন বাংলাদেশ গঠনের সংগ্রাম বিজয়ে পরিণত হয়।