কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরের জনতা শপিং সেন্টার এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি পথসভা শুরু হওয়ার আগেই তা ভাঙচুরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে ছাত্রদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই সভার মঞ্চে হামলা চালান বলে অভিযোগ এনসিপির।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জনতা শপিং সেন্টারের সামনের সড়কে একটি ট্রাকের ওপর এনসিপি নেতাকর্মীরা সভার মঞ্চ তৈরি করছিলেন। দুপুর থেকেই মাইকিং চলছিল। কিন্তু বিকেল পৌনে চারটার দিকে হঠাৎ কয়েকজন লাঠিসোঁটা হাতে এসে মঞ্চটি ভেঙে দেয়। এ সময় এনসিপির কর্মীদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং সমাবেশের ব্যানার ছিঁড়ে ট্রাকের কাচও ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এনসিপির চকরিয়া উপজেলা সংগঠক খাইরুল বাশার বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ পথসভায় বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। তারা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে, ট্রাক ভাঙচুর করে এবং সভাস্থল দখল করে স্লোগান দিতে থাকে।”
অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, এনসিপির এক নেতার বক্তব্যে তাঁরা ক্ষুব্ধ। কক্সবাজার শহরে একটি সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সম্পর্কে ‘আপত্তিকর মন্তব্য’ করেন। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বলেন, “সালাহউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য সাধারণ মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করেছি এবং আমাদের কেন্দ্রীয় নেতার নির্দেশে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।”

এদিকে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ এক ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন, বিএনপির কর্মীরা চকরিয়ায় এনসিপির গাড়িবহর আটকে রেখেছে এবং স্লোগান দিয়েছে। একই সঙ্গে লোহাগড়ায় এনসিপির ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে যে আচরণ আওয়ামী লীগ করেছে, এখন বিএনপিও সেই পথেই হাঁটছে। তাদের পরিণতি দেখে যদি শিক্ষা না নেন, তাহলে আপনাদের ভবিষ্যৎও অনুরূপ হবে।”
চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।”
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র জসিম উদ্দিন জানান, এনসিপির নেতা নাহিদ ইসলামসহ অন্তত ১০-১২টি গাড়ি কিছু সময়ের জন্য আটকে রাখা হয়েছিল। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে তারা নিরাপদে জেলা সীমান্ত অতিক্রম করে।
তিনি আরও বলেন, “এনসিপির অনির্ধারিত সভাটি বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের মুখে পণ্ড হয়ে গেছে।”