আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস বা কাজের জন্য ভিসার আবেদনকারীদের এখন থেকে ‘আমেরিকাবিরোধী মনোভাব ও কর্মকাণ্ড’ খতিয়ে দেখা হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেদনকারীদের কার্যক্রমও এর আওতাভুক্ত থাকবে। গত মঙ্গলবার এক ঘোষণায় মার্কিন কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা (ইউএসসিআইএস) জানায়, আবেদনকারীর সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, ইহুদিবিদ্বেষী কার্যকলাপ বা আমেরিকাবিরোধী মতাদর্শের প্রমাণ পাওয়া গেলে ভিসা দেওয়া হবে না। নতুন এ নীতিমালা ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে চালু করা হলো।
এর আগে চলতি বছরের জুনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাই-বাছাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। এবার সেটিকে আরও বিস্তৃত করে ‘আমেরিকাবিরোধী কার্যকলাপ’ অনুসন্ধান অন্তর্ভুক্ত করা হলো।
ইউএসসিআইএস মুখপাত্র ম্যাথু ট্র্যাজেসার বলেন, “যারা আমেরিকাকে ঘৃণার চোখে দেখে এবং আমেরিকাবিরোধী মতাদর্শ প্রচার করে, তাদেরকে আমেরিকার সুবিধা দেওয়া উচিত নয়।”
তবে ‘আমেরিকাবিরোধী মনোভাব’ কী—এর কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। নীতিমালায় শুধু বলা হয়েছে, ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসী সংগঠন সমর্থন এবং রাষ্ট্রবিরোধী মতাদর্শ এর আওতাভুক্ত। এর সঙ্গে ১৯৫২ সালের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের কিছু ধারা উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য কিংবা মার্কিন সরকার উৎখাতের প্রচারকদের নাগরিকত্ব নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
এই অস্পষ্ট শব্দচয়নকে ঘিরে অভিবাসন আইনজীবী ও অধিকারকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, কর্তৃপক্ষের বিবেচনার ওপর নির্ভর করে ভিসা প্রত্যাখ্যানের ঘটনা আরও বাড়বে।
অভিবাসনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যারন রেইচলিন-মেলনিক বলেন, “এই সিদ্ধান্ত ম্যাকার্থিজম যুগের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন কমিউনিজম আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করা হয়েছিল।”
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মনে করছে, নতুন এই নীতিমালা বাস্তবে বিদেশি শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও অভিবাসীদের ভিসা পাওয়ার পথে নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।