নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছেন, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের নির্বাচন একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। এতে করে যাঁরা ‘মব’ বা দলবদ্ধ হয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করেন, তাঁরা ভাগ হয়ে যাবেন। ফলে একসঙ্গে কোথাও বড় আকারে মব তৈরি করা সম্ভব হবে না এবং নির্বাচনের সময় তাঁরা কোনো সুবিধা করতে পারবেন না।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান সিইসি।
সিইসি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি মূলত নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ও নির্বাচনের সময়কার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। জবাবে তিনি জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে নির্বাচনী চিঠি পাওয়ার পর থেকেই কমিশন জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগেই অনেক বড় কাজ শুরু হয়ে গেছে, যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই না কেউ কমিশনের ওপর দোষ চাপাক। এবার আমরা এমনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে বলা না যায়— কমিশন প্রস্তুত ছিল না। সরকার যখন চাইবে, আমরা নির্বাচন পরিচালনায় সক্ষম।”
রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সিইসি জানান, অতীতে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও দলগুলো শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছেছে। এবারও তিনি আশাবাদী যে জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেবে।
সিইসি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন, যা ইতিবাচক দিক। এখন পর্যন্ত তিনি কোনো রাজনৈতিক চাপ বা প্রভাব অনুভব করেননি এবং কমিশন স্বাধীনভাবেই কাজ করছে।
গুজব প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “বাংলাদেশে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হয়, এমনকি গুজব ম্যানুফ্যাকচারের জন্য আলাদা ইন্ডাস্ট্রিও তৈরি হয়েছে। এসব গুজবে কান দেওয়া যাবে না।”
কালোটাকার ব্যবহার রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান সিইসি। তবে পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিন হলেও নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এবার প্রবাসীদের ভোটাধিকারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বড় পরিসরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাম্প্রতিক কমিশনের এক শুনানিতে গোলযোগের বিষয়ে সিইসি জানান, ঘটনাটির পর জিডি করা হয়েছে এবং পুলিশকে অপরাধীদের শনাক্ত করতে বলা হয়েছে।
সবশেষে তিনি বলেন, “সব মিলিয়ে আমরা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছি।”